অনলাইন ডেস্ক:
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ইতিহাস ভুলে গেলে বাঙালি জাতি আবারও পথভ্রষ্ট হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল শোকসভায় সভাপতির বক্তৃতায় আজ মঙ্গলবার এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
সভায় লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হুমায়ুন ফরহাদ, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুক, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা বঙ্গবন্ধুর জীবন আলেখ্য নিয়ে আলোচনা করেন। এতে আরো বক্তৃতা করেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।
শোকসভায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও আইন মন্ত্রণালয়ের উভয় বিভাগের কর্মকর্তাগণসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধানগণ অংশ নেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিসমাপ্তি ঘটানোর চেষ্টা করেছিল, তারা এখনও সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা আজও এই হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস বিকৃত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, যে মহান ব্যক্তিটি পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্যাতন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে আমাদের মুক্তি অর্জনের জন্য প্রায় ১৪ বছর জেল খেটেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাঁকে হত্যা করে বাঙালি জাতি যে কলঙ্ক লেপন করেছে তা কোনোভাবেই মুছে ফেলা যাবে না।
আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আজীবন চেষ্টা করে গেছেন। আমাদের সকলের দায়িত্ব হবে বঙ্গবন্ধুর এ স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করা, তাঁর আদর্শ লালন করা।
আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ হয়েছে, আইনের শাসন ধূলিস্যাৎ হয়েছে, ২১ বছর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার কোনো এফআইআরও হয়নি। ১৯৯৬ সালে ওই অধ্যাদেশ বাতিলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। অথচ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাতজন বিচারক আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আপিল শুনতে বিব্রত বোধ করেছেন। এগুলো ইতিহাসের সত্য কথা, ভুলে গেলে চলবে না। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সামনের দিকে চলতে হবে।
বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করতে হবে, তবেই বঙ্গবন্ধু চিরঞ্জীব হবেন। জাতির পিতা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, আমরা কতটুকু তা করতে পেরেছি তা অনুধাবন করতে হবে।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডে নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।