বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার:
রামুর গর্জনিয়ায় এতিম,ভুমিহীন, হতদরিদ্র পরিবারের শত বছরের প্রাচীণ ভিটেমাটি জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে চিহ্নিত ভুমিদস্যু চক্র।সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড মোক্তার ঘোনা গ্রামের মরহুম ফজল করিমের স্ত্রী দিল ফরোজ বেগম (৬০)। বাল্য বয়সেই বিয়ের পিড়িতে বসেন ফজল করিমের সাথে। তাদের সংসার জীবন খুবই কষ্টে অতিবাহিত হলে ও সন্তানদের মায়ায় দিনমজুর স্বামী ফজল করিমের সাথে দাম্পত্য জীবন সুখেই কাটছিল। স্ত্রী দিল ফরোজ তার স্বামী ফজল করিম দু’জনের দৈনিক রোজগারে যেখানে সন্তানদের দিনে দু’ বেলা ভাত জুটতে হিমশিম খেত সেখানে স্ত্রী দিল ফুরোজের কাছে পুত্র’কণ্যা সন্তানদের রেখে স্বামী ফজল করিম ১ যুগের বেশি সময় পূর্বে পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। জনম দুঃখিনী মা দিল ফরোজ এ বাড়ী ও বাড়ী ঝিয়ের কাজ করে চরম অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের নিয়ে দিনাতিপাত করে আসছিলেন। কয়েক বছর আগে দিল ফরোজের কিশোরী দু’কন্যা অভাবের তাড়নায় চট্টগ্রাম শহরে কাজের সন্ধানে যায়।সেখানে গার্মেন্সে চাকরি করে যা টাকা উপার্জন করেন তা মা দিল ফরোজের হাতে তুলে দেন।কয়েক বছরের কষ্ট করে জমানো টাকা দিয়ে পলথিনের বেড়া ও ছাউনির ঝুপড়ি ভেঙ্গে মাতা গোঁজার ঠাঁই “ঘর করার প্রস্তুতি নিলে প্রতিবেশী মৃত সোলতান আহমদের ভুমিদস্যু পুত্র আলী আহম্মদ হতদরিদ্র, ভুমিহীন, শত বছরের পুরনো ভিটেমাটি জবরদখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। আশপাশের অপরাধ জগতের লোকজনদের ভাড়ায় এনে দিল ফরোজ বেগমের দু’ যুবতী এতিম কন্যা কে ব্লেড দিয়ে আঘাঁত সহ নানান ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পাশাপাশি বিধবা দিল ফরোজ বেগমের সহায় সম্পত্তি জবরদখলের হীন চক্রান্তের নকশা অনুসারে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে নামে-বেনামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্হানীয় মৃত সোলতান আহমদের পুত্র ভুমিদস্যু সম্রাট আলী আহম্মদ গংরা।এলাকাবাসী জানান, প্রায় বছরের প্রাচীণ বসতভিটি দিল ফরোজ বেগমের স্বামী ফজল করিমের পৈত্রিক নিবাসস্হল।যেখানে বিধবা দিল ফরোজ বেগমের স্বামী ফজল করিম ও শ্বশুর -শ্বাশুড়ির কবর রয়েছে। বাকি ১০ শতকের মত জায়গা মূলত বিধবা দিল ফরোজ বেগম তার দু’যুবতী কন্যা ও শ্বশুরবাড়ীর লোকজন মাতাগোজার শেষ আশ্রয়স্থল ভিটেমাটি। এই ১০ শতক ভিটেমাটির জমি টুকু মূলত সরকারি খাস জমি।যা ১ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত বিএস ৫৮৭১ দাগের দক্ষিণ পশ্চিমাংশ।দিল ফরোজ বেগম ও তার কন্যারা জানান,একই এলাকার মৃত সোলতান আহমদের পুত্র ভুমিদস্যু আলী আহম্মদ ও তার দলবল প্রকাশ্য তাদের নানান ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে।দু’যুবতী মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ঘর তৈরীর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ইট,সিমেন্ট, বালি মওজুদ করলে ও ভূমিদস্যু আলী আহম্মদ তার লালিত,পালিত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে অধিকাংশ মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছেন।একদিকে এতিম দু’ যুবতী মেয়ের ইজ্জত হরণের আতঙ্কে যেমন আছেন তেমনি শত বছরের পুরনো সামান্য ভিটেমাটি টুকু ভুমিদস্যু আলী আহম্মদ ও তার দলবল কর্তৃক জবরদখলের আশঙ্কায় চরম আতঙ্কে মানবেতর জীবনযাপন করছে।গর্জনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, জননেতা জনাব আইয়ুব সিকদার জানান, দিল ফরোজ বেগমদের ভিটেমাটি জবরদখলের অপতৎপরতা চালাচ্ছে স্হানীয় ভুমিদস্যু আলী আহম্মদ গংরা।অসহায় দিল ফরোজ বেগম ও তার এতিম দুই কন্যার শেষ আশ্রয়স্থল ভিটেমাটি ভুমিদস্যু আলী আহম্মদ গংরা যেন জবরদখল করতে না পারে সেই লক্ষ্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ জরুরী। গর্জনিয়ার ৫ নং ওয়ার্ড মোক্তার ঘোনা গ্রামের অসহায়,এতিম ও ভুমিহীন দিল ফরোজ বেগম ও তার সন্তানদের জানমালের নিরাপত্তা ও বসতভিটা জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠা ভুমিদস্যু আলী আহম্মদ গংদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবী জানিয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার,রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভুমি) রামু,কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, মাননীয় কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ, মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী,মাননীয় ভূমিমন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ র্যাব, বিজিবি এবং গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মহোদয়ের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।এ ব্যাপারে আলী আহমদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে তার বক্তব্য জানতে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।