অনলাইন ডেস্ক:
জনপ্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ৩৫ কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানকে পদক প্রদান করা হয়েছে। জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস আজ মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালের জনপ্রশাসন পদক এবার একসঙ্গে দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের জন্য জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয়েছে ১৫টি এবং ২০২১ সালের জন্য ২০টি পদক।
পদক পেলেন যেসব কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠান:
মোটরযানের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করার কাজের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জিয়াউর রহমান জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তিগত শ্রেণিতে (সাধারণ ক্ষেত্র) জনপ্রশাসন পদক-২০২১ পেয়েছেন।
ইউনেস্কোতে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের আন্তর্জাতিকীকরণের লক্ষে প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক তৎপরতার জন্য দলগত শ্রেণিতে (সাধারণ) পদক পেয়েছেন প্যারিসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ হোসেন ও তাঁর দল। প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে এই পদক পেয়েছে বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিন সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার প্রকল্প।
পরিবার পরিচিত কাজের জন্য ব্যক্তিগত (কারিগরি ক্ষেত্র) শ্রেণিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধনের কাজের জন্য দলগত (কারিগরি) শ্রেণিতে যৌথ মূলধন কম্পানি বা ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের তৎকালীন নিবন্ধক (বর্তমানে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব) মো. মকবুল হোসেন ও তার দল এবং পেনশন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশন কাজের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে (কারিগরি) অর্থ বিভাগ এই পদক পেয়েছেন।
জেলা পর্যায়ে পঞ্চগড়ের সাবেক জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন (ব্যক্তিগত) এবং দলগত শ্রেণিতে খুলনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ও তার দল এই পদক পেয়েছেন। এর মধ্যে সাবিনা ইয়াসমিন কন্যারত্নের জন্য এবং হেলাল হোসেন ও তাঁর দল বানীশান্তা যৌনপল্লিতে জন্ম নেওয়া সমাজচ্যুত শিশুদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য এই পদক পেয়েছেন।
জনপ্রশাসক পদক ২০২০ পাচ্ছেন দলগত শ্রেণিতে ‘মাতৃমৃত্যু মুক্ত কাপাসিয়া মডেল’-এর উদ্ভাবক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ও তাঁর দল। এছাড়া ওই বছরের জেলা পর্যায়ে ব্যক্তিগত শ্রেণিতে পদক পেয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও পুনর্বাসনের জন্য তিনি এই পদক পাচ্ছেন।
দলগত শ্রেণিতে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর রশীদ ও তাঁর দল পিপিপি অনুসরণ করে আধুনিক মানের সুইমিংপুল, জিমনেশিয়াম ও মিনি লাইব্রেরি স্থাপনের জন্য এবং টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে ঢাকার ডিসি) মো. শহীদুল ইসলাম ও তার দল টাঙ্গাইলে বধ্যভূমি সংস্কার ও নবরূপে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য এই পদক পেয়েছেন। একই বছর প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে হাটহাজারী ইউএনও কার্যালয় এই পদক পেয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের পদক ওই বছরের ২৩ জুলাই দেওয়া কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে ১৪ জানুয়ারি সম্ভাব্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাও স্থগিত করা হয়।
জাতীয় পর্যায়ে তিন ক্যাটাগরির পুরস্কার প্রাপ্তদের ১৮ ক্যারেট মানের এক ভরি ওজনের স্বর্ণপদক এবং সনদ দেওয়া হবে। এর বাইরে জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তি শ্রেণিতে জনপ্রতি এক লাখ টাকা এবং দলগত অবদানের জন্য সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পাবেন। প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে শুধু পদক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়। জেলা পর্যায়ে ব্যক্তি শ্রেণিতে পুরস্কারপ্রাপ্তরা সনদ ও ৫০ হাজার টাকা এবং দলগত শ্রেণিতে বিজয়ীদের সনদের সঙ্গে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন পদকের জন্য ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী, জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে ছয় ক্যাটাগরিতে পদক দেওয়া হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর ২৩ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক দেওয়া হচ্ছে। দিনটি জনপ্রশাসন দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। ওই বছর প্রথমবারের মতো সাধারণ ও কারিগরি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে ছয়টি এবং জেলা পর্যায়ে আটটিসহ মোট ১৪টি পদক দেওয়া হয়। যেখানে ২৬ জন ব্যক্তি এবং চারটি প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কার পায়।