নোয়াখালী প্রতিনিধি:
ডিজি অফিসে বড় ভাই কর্মরত থাকায় স্বপদে টানা ১১ বছর। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের ২ কর্মচারীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম, দুর্নীতি, জালিয়তি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। ৪ মাস আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তাদেরকে দ্রুত চট্টগ্রাম বিভাগের বাইরে বদলির অনুরোধ জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডিও লেটার দেন। হাতিয়া সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের ছায়ালিপি, শিক্ষক, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সূত্রে এসব খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দেয়া ডিও লেটারে উল্লেখ করেন যে, ‘হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী সোহরাব উদ্দিন ও হিসাব সহকারী মিরাজ উদ্দিন ২০১০ সাল থেকে হাতিয়ায় কর্মরত রয়েছে। তাদের বাড়ি হাতিয়ায় (নিজ উপজেলা) হওয়ায় তাদের অনিয়ম সীমাহীনভাবে বাড়ছে। শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ঘুষ গ্রহণ এবং যথাসময়ে অফিসে না আসা, সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে রুঢ় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানায়। এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করা, সেবাপ্রত্যাশীদের চাহিদা মোতাবেক সেবা যথাযথভাবে দেয়া, সর্বোপরি সরকারের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে অতি দ্রুত তাদেরকে চট্টগ্রাম বিভাগের বাইরে বদলির অনুরোধ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির হাতিয়া শাখার সভাপতি আ.ক.ম আবদুল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল ও প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন এমরান এবং ভূক্তভোগী শিক্ষকগণ ঐ ২ কর্মচারীর বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ করেন। কয়েক শ’ শিক্ষকের সার্ভিস বুক হালফিল না থাকায় ইএফটি করা যাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষকদের অভিযোগ অফিস সহকারীকে একাধিকবার টাকা দিলেও সার্ভিস বুকগুলো ২০১৫ সালের বেতন স্কেল অনুযায়ী ফিক্সেশন করা হয়নি। ২ কর্মচারীর কেউই শিক্ষকদের পেনশন বিল, বিভিন্ন বকেয়া বিল ও সার্ভিস বুক হালফিলের কাজ করেন না। নির্দিষ্ট কয়েকজন শিক্ষক এ কাজগুলো করেন। শিক্ষকদের সার্ভিস বুকের লেখাগুলো ঐ শিক্ষকদের হাতের।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম বলেন, হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হয়েছে, শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, উচ্চমান সহকারী সোহরাব উদ্দিনের বড় ভাই মো. নবীর উদ্দিন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা অফিসার। সমন্বয় ও তত্ত্বাবধান সেলে কর্মরত থাকায় তিনি হাতিয়ার শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষা অফিসার কাউকে তোয়াক্কা করেন না।