লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর জেলার মান্দারীতে একটি সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়কটিতে নিন্মমানের খোয়া ব্যবহারের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়েও কম খোয়া এবং বালু ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া সড়কের পাশে নিয়ম অনুযায়ী গাইড ওয়াল নির্মাণ করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
জেলার সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদ নগর এবং যাদৈয়া গ্রামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন সড়টির কার্পেটিং এর কাজটি দায়িত্বে রয়েছেন দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মজিবুর রহমান।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) লক্ষীপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন অগ্রাধিকার-৩ প্রকল্প (আইআরআইডিপি) এর আওতায় মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া এবং মোহাম্মদনগর গ্রামের প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং কাজের নির্মাণ ব্যায় বরাদ্দ হয়েছে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এস আর কনষ্ট্রাকশন’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পেলেও মূলত সড়কটির নির্মাণ কাজ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটির নির্মাণ কাজে নিন্মমানের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিষয়টি সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এলজিইডির একজন উপসহকারী প্রকৌশলী সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সতত্যা পেয়ে ঠিকাদার মজিবকে মৌখিক সতর্ক করে নিন্মমানের খোয়া অপসারণের নির্দেশ দিলেও এতে কোন কর্ণপাত করেননি ঠিকাদার মজিবুর রহমান।
নিম্মমানের ওই খোয়া দিয়েই রাস্তার কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি কাজে অনিয়ম করছেন বলে অভিযোগ তাদের। সড়কটির নির্মাণ কাজে নজরদারি করে মানসম্মত কাজ করানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, সড়টির নির্মাণ কাজ শুরু থেকেই অনিয়ম করে আসছেন ঠিকাদার মজিবুর রহমান। সাবগ্রেড করার সময় বালুর পরিমাণ কম দেওয়া হয়েছে, আর সাব বেস এবং বেসের ক্ষেত্রে যে খোয়া দেওয়া হচ্ছে তাও পরিমাণে একেবারে কম এবং নিন্মমানের।
এছাড়া সড়কের পাশের খালে যে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে তাতেও কারচুপি করেছেন তিনি। কাজের সিডিউলে আরসিসি ডালাই দিয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করার কথা থাকলেও সেখানে ইটের গাঁথুনি দিয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়কের ব্যবহৃত খোয়াগুলো চেয়ারম্যানের নিজস্ব মালিকানাধীন ইটভাটার।
এ ব্যাপারে সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, রাস্তায় ব্যবহৃত খোয়া ভালো মানের। নিয়ম অনুযায়ী তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহ আলম পাটওয়ারী জানান, ঠিকাদারকে একাধিকবার বলে দেওয়া হয়েছে কাজের মান ঠিক রাখার জন্য। সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করলে কোন বিল দেওয়া হবে না। এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী গাইড ওয়াল নির্মাণ না করায় সেটারও বিল পাবেনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।