অনলাইন ডেস্ক:
আজ শনিবার (১৭ জুলাই) ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১৯টি অস্থায়ী পশুর হাটে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে, যদিও এর আগেই ইজারার শর্ত ভেঙে বিভিন্ন হাটে শুরু হয় পশু বিক্রি।
বিক্রেতারা বলছেন, ছুটির দিন (শুক্রবার) হওয়ায় সবাই পশু দেখতে হাটে ভিড় জমিয়েছে; কিন্তু বেচাকেনা এখনো শুরু হয়নি। যদিও বেশ কিছু ক্রেতা জানান, ঝামেলা এড়াতে এবং ভালো গরু পেতে হাট শুরু হওয়ার আগেই তাঁরা সেরে ফেলেছেন পশু কেনার কাজটি।
গতকাল শুক্রবার ছিল রাজধানীর পশুর হাটগুলোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করার শেষ দিন। দেখা যায়, এরই মধ্যে বেশির ভাগ হাটের প্রস্তুতির কাজ সেরে ফেলেছেন ইজারাদাররা। পশু বেঁধে রাখার জন্য বাঁশের কাঠামো নির্মাণ, হাটের নিচু জায়গাগুলোতে বালু ফেলা, জীবাণুনাশক টানেল বসানো, হাসিল বুথ, হাট মনিটরিং কমিটি সেন্টারসহ সব কাজ শেষ। কিছু হাটের ইজারাদাররা পশু বেঁধে রাখার বাঁশের কাঠামো নির্মাণের কাজ কিছুটা বাকি রেখেছেন। হাটে আরো কী পরিমাণ নতুন গরু আসবে, সেটা না বুঝে এখনই বাকি কাজ সারতে চান না তাঁরা।
১৯টি অস্থায়ী পশুর হাটের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) হাটের সংখ্যা ১০। এ ছাড়া সারুলিয়ায় ডিএসসিসির একটি স্থায়ী হাট রয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) রয়েছে ৯টি হাট। পাশাপাশি গাবতলীতে রয়েছে সংস্থাটির একটি স্থায়ী হাট। গতকাল গাবতলীতে দেখা যায়, কোরবানি উপলক্ষে হাটটিতে পশু বিক্রি শুরু হয়েছে বেশ জোরেশোরেই। সারা বছর হাটটি চালু থাকলেও কোরবানির সময়ই হাটের মূল বেচাকেনা হয়। গতকাল এই হাট থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকায় গরু কিনেছেন এক ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘পরে হাটে ভিড় আরো বাড়ব। তাই আগেই কিনা নিলাম। করোনার মধ্যে ভিড়ের হাটে না আসাই ভালো।’
রাজধানীর মেরাদিয়া পশুর হাটে দেখা যায়, বনশ্রী এইচ ব্লক থেকে এন ব্লক পর্যন্ত প্রস্তুত এই হাট। ঢুকতেই মাইকে বারবার স্বাস্থ্যবিধি মানাসংক্রান্ত ঘোষণা কানে এলেও সে বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে দেখা যায়নি ক্রেতা-বিক্রেতাকে। মাস্ক, জীবাণুনাশক টানেল বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারেও ছিল তাঁদের অনীহা। হাটটিতে আজ বেচাকেনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অল্প পরিসরে এরই মধ্যে এ হাটে চলছে পশু বেচাকেনা।
এদিকে রাজধানীর ভাটারা থানার নতুনবাজার সংলগ্ন সাঈদনগর কোরবানির পশুর হাটের প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ। দু-তিন ধরে এই হাটে অল্প কিছু গরু-ছাগল বিক্রি হচ্ছিল। তবে আজ শুরু হচ্ছে হাটের মূল বেচাকেনা। সময় যত যাচ্ছে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ও বাড়ছে। ক্রেতাদের বেশির ভাগই দামদর দেখতে আসছে। আবার কেউ কেউ পছন্দের গরুটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এবং দামদর ঠিক করে বায়না দিয়েও যাচ্ছেন। হাটে বেশির ভাগ বিক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে জটলা বেঁধে যেমন-তেমনভাবে সময় পার করছেন। হাটের গেটগুলোর মুখে জীবাণুনাশক টানেল ও বেসিন বসানো হলেও কাউকে ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। তবে ইজারাদার কর্তৃপক্ষ সব সময় মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক করছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের।
হাটটিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক তিন শিফটে কাজ করছেন।