ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় মজিবুর রহমান (৫০) নামের রামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের এক মেম্বারের বিরুদ্ধে সরকারি যায়গা দখল করে বিল্ডিং তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে এলাকায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে৷ ঘটনাস্থলে গিয়ে লক্ষ্য করা যায়, মুজিবুর রহমান রাস্তার পাশের সরকারি খাল দখল করে বিল্ডিং তুলেছে। গ্রামের প্রধান খালটি দখল করায় এলাকার পানি যাওয়ার রাস্তাটিও বন্ধ হয়ে যায়। সে একজন এলাকার মেম্বার হয়েও এ কাজ কিভাবে করেন? ২০ বছর যাবত সরকারি খালটি দখল করে রেখেছে মুজিবুর রহমান।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার মোহাম্মদপুর গ্রামে সরকারি যায়গা দখলের অভিযাগে জাহাঙ্গীর আলম বাদল ও ৪, ৫, ৬ ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শামসুন্নাহার নাসরিনের আড়াই ফুট যায়গা উচ্ছেদ করা হয়। ওই সময় সদর উপজেলার ইউএনও ও উপজেলার ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এলাকাবাসীর দাবী শামসুন্নাহার নাসরিনের যায়গা যদি সরকারি যায়গায় হয়ে থাকে তাহলে এ গ্রামের মেম্বার মুজিবুর রহমানের বিল্ডিংটিও সরকারি যায়গায় পড়েছে। সে এলাকার প্রধান খালটি নিজের দখলে রেখে বন্ধ করে দিয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে লক্ষ্য করা যায়, মুজিবুর রহমান (৮২ ফিট দৈর্ঘ ও ৮ ফিট প্রস্থ) সরকারি যায়গা দখল করে রেখেছে। যার মধ্যে তার একটি তিনতলা বিল্ডিংয়ের বেশ অংশ পড়েছে৷ কিন্তু মুজিবুর রহমান এ যায়গাটি ২০ বছর দখল করে রাখলেও কেউ তার প্রতিবাদ করতে পারেন না। কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন মামলা-হামলার শিকার হতে হয়।
সরকারি যায়গা মাপার ব্যাপারে সেন্দার নায়েব আশুতোষ চন্দ্র ভৌমিক বলেন, মোহাম্মদপুর রাস্তার পাশের ৪১৮ মোজার যায়গাটি মাপা হয়েছে। মাপার দিক বিবেচনা করলে অনেকের বাড়ি সরকারি যায়গায় পড়েছে৷ যে যায়গা গুলো সরকারি যায়গাতে পড়েছে ওই গুলো সনাক্ত করেছি এবং লাল দাগও দিয়েছি। রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর পরবর্তীতে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
রামরাইল ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাৎ খান বলেন, মোহাম্মদপুর মোজায় রাস্তাটি নিয়ে গত ১ বছর যাবত দ্বন্দ্ব চলছে৷ কেউ সরকারি যায়গা দখল করবে সে সুযোগ নেই। সম্মানিত ইউএনও স্যার এব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিবেন। কেউ যদি সরকারি খাল দখল করে তাহলে অবশ্যই তা উদ্ধার করা হবে৷ মুজিবুর রহমান বিরুদ্ধে সরকারি যায়গা দখল অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না।
মোহাম্মদপুর ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার মুজিবুর রহমান বলেন, আনিত অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যে ও বানোয়াট। নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে একটি মহল তা বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করছেন। তিনি জনপ্রতিনিধি হয়ে কিভাবে সরকারি যায়গা দখল করবেন, বরং যারা সরকারি যায়গা দখল করছে তাদের কাছ থেকে দখলকৃত যায়গা উদ্ধার করার জন্য কাজ করতেছি।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, গত শনিবার মোহাম্মদপুর মোজার দখলকৃত আড়াই ফুট সরকারি যায়গা উদ্ধার করেছি৷ রবিবার আবার নায়েব ও সার্ভিয়ারকে পাঠিয়েছি। তারা ওই মোজার পুরো যায়গাটি মাপ নিয়েছেন। এখন তা যাচাই-বাছাই করা হবে৷ যদি কেউ সরকারি যায়গা দখল করেন। তাহলে জনগণের স্বার্থে অবশ্যই তাকে ওই যায়গা ছেড়ে দিতে হবে।