মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধিঃ
নিভৃত গ্রামের এক অসহায় নারী লক্ষী রানী। নাম লক্ষী হলেও কপালে দুঃখ ছাড়া সুখের দেখা মেলেনি। স্বী সন্তান কেউ নেই তার। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছোট বেলা থেকে দুই পা পঙ্গু। বিয়ে হয়েছিলো কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে স্বামী অমল সরকার পালিয়ে যায়। সেই থেকে দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে বসবাস শুরু করেন। দুমুঠো ভাতের জন্য এখন অনাহারে দিন কাটে তার।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের রুই-ফলোশিয়া গ্রামে মানবেতর জীবন নিয়ে বসবাস করছেন দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী লক্ষী রানী। তার করুন অবস্থা দেখে প্রতিবেশি লক্ষণ বিশ্বাস তার দেখাশুনা দায়িত্ব নেন। লক্ষণ বিশ্বাস পেশায় একজন জেলে। এই লকডাউনে তারও মাছ বিক্রি নেই। তার পরিবার এখন ছয় জন সদস্য রয়েছে। ইচ্ছা থাকলেও স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করে দিতে পাারেনি লক্ষন। তাই পলিথিনের জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করে লক্ষী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট খুপড়ি ঘরের বারান্দায় বসে পাটি বুনছে তিনি। পাশে একটি জরাজীর্ণ চুলা। একটি ফুটো পানির পাত্রে খাওয়া দাওয়া চলে তার। সঙ্গী হিসেবে একটি মাত্র বিড়াল আছে সেটিও দড়ি দিয়ে বাঁধা রয়েছে। রাত্রে ঘুমানোর জন্য রয়েছে একটি মাত্র ছিঁড়ে যাওয়া খেজুর পাতার পাটি ও পুড়ানো একটি কাঁথা। পাশেই মরিচি পড়া তৈল বিহীন কুপি তার।
অশ্রুসিক্ত চোখে প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা সংবাদকর্মীকে জানান, ‘আমার পৃথিবীতে কেউ নেই। আমারে আপনারা দেকপেন। শুনছি সবাই সরকারি ঘর পাইচে। আমি এই ঘরে শুতি পারিনে। সরকাররে বলে একটা ঘর দিয়েন আমারে’
লক্ষন বিশ্বাস জানান, ‘২৫ বছর আগে তার স্বামী ফেলে রেখে গেছে লক্ষীকে। কেউ খোঁজ খবর নেয়নি। মানবিক চিন্তা করে তাকে দেখাশুনা করি। লকডাউনে আমার আয়ের পথ প্রায় বন্ধ। আমার পরিবার ঠিক মত চলে না। লক্ষীর ৫৫ শতক জমি আছে। সেখানে সরকারি একটি ঘর করে দিলে সে ভালো করে থাকতে পারতো।’ বাবুখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, ‘এই বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। তবে বিষয়টি শুনার পর ওই ওয়ার্ডের মেম্বর এর সাথে কথা বলেছি। তাকে দ্রুতই সহযোগিতার কথা জানান তিনি।’
এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রামানন্দ পাল মুঠোফোনে আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘লক্ষী রানীর বিষয়ে আমরা একটি তথ্য পেয়েছি। আমরা পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। দ্রুত ওনার একটা বাসস্থানের ব্যবস্থা আমরা করে দিবো।