৫৩ কভিড হাসপাতালেই নেই আইসিইউ ব্যবস্থা
অনলাইন ডেস্ক:
করোনায় মৃত্যু বেড়েই চলেছে। আবারও আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এক দিনে ২১২ জনের মৃত্যুর তথ্য দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার হিসাবে এই মৃত্যুর মধ্যেই নতুন আরো ১১ হাজার ২০৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত ১০ লাখ ছাড়িয়ে উঠেছে ১০ লাখ ৫৪৩ জনে। মৃত্যুর সংখ্যা উঠেছে ১৬ হাজার চারজনে। সুস্থ হয়েছে আট লাখ ৬২ হাজার ৩৮৪ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ছয় হাজার ৩৮ জন।
এসব তথ্যের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩০.৯৫ শতাংশ। আর একই সময়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটেছে খুলনায় ৭৯ জনের। এরপরই ঢাকায় মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের, চট্টগ্রামে ২৬ জন, রাজশাহীতে ২৩ জন, রংপুরে ১২ জন, ময়মনসিংহে আটজন, সিলেটে ছয়জন ও বরিশালে পাঁচজন। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১১৯ জন ও নারী ৯৩ জন। যাদের বয়স ১১-২০ বছরের দুজন, ২১-৩০ বছরের সাতজন, ৩১-৪০ বছরের ১৭ জন, ৪১-৫০ বছরের ৪০ জন, ৫১-৬০ বছরের ৫৬ জন ও ষাটোর্ধ্ব ৯০ জন। যাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছে ১৬০ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩৬ জন ও বাসায় ১৬ জন।
এদিকে মৃত্যুর এমন ঊর্ধ্বমুখী কারণের পেছনে নানা ধরনের সংকট ও অব্যবস্থাপনার প্রশ্নও ক্রমেই আরো বড় হয়ে উঠছে। গত দেড় বছরে করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন, আইসিইউ, হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানুলাসহ আরো অনেক কিছু বাড়ানো হলেও এখনো তার ঘাটতি রয়ে গেছে পদে পদে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে এখন সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে মহানগর, বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে মোট ১২৯টি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা ইউনিট বা ব্যবস্থাপনা রয়েছে। অথচ এই হাসপাতালগুলোর মধ্যেই ৫৩টি হাসপাতালে আইসিইউর কোনো ব্যবস্থাই নেই। বাকিগুলোর মধ্যে ৩৪টির কোনোটিতেই আইসিইউ বেডের সংখ্যা ১০টির বেশি নয়। অনেক হাসাপাতালে আছে দু-তিনটি করে আইসিইউ বেড।
অন্যদিকে যেসব হাসপাতালে কভিড আইসিইউ আছে সেগুলোর মধ্যে ৪১টি হাসপাতালে সব আইসিইউ বেডে এখন রোগী ভর্তি। ফলে এখন মোট ১২৯টি হাসপাতালের মধ্যে ৯৪টি হাসপাতালেই আইসিইউতে রোগী নেওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া কুর্মিটোলা হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালটিতেও আইসিইউ বেড আছে মাত্র ১০টি, যা অনেক আগেই রোগীতে পূর্ণ। সেখানে যে রোগীরা মারা যাচ্ছে সেই বেডগুলো পূর্ণ হচ্ছে ভেতরের অপেক্ষমাণ রোগীদের মাধ্যমেই।
এদিকে বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মাঈনুল আহসান হাসপাতালগুলো থেকে করোনা রোগীদের তথ্য গণমাধ্যমকে না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যা নিয়ে গতকাল ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে। অবশ্য পরে তিনি এটি সংশোধন নিয়ে সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এই সিভিল সার্জন আরো বলেন, ‘আমরা ঢাকায় পাঁচটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি। আজ (গতকাল) স্থানগুলো দেখা হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টার, মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামসহ পাঁচ জায়গায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হবে।