ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর উপজেলায় করোনার কারনে অভাব-অনটন ও কিস্তির টাকা দিতে না পেরে আনোয়ারা বেগম (৩০) নামে চার সন্তানের এক জননী আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার (২ জুলাই) বিকেলে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন সদর থানার পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে আনোয়ারা বেগম কেরি পোঁকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
আনোয়ার বেগম উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামের গৌতম পাড়া এলাকার ফারুক মিয়ার স্ত্রী। তাদের ঘরে তিনটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান আছে।
হাসপাতাল ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১১ বছর আগে আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপূর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের নজারবাড়ি এলাকার সিরাজ মিয়ার মেয়ে আনোয়ারা বেগমকে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামের গৌতমপাড়া এলাকার আজাহার মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়ার সাথে বিয়ে দেন। তাদের ঘরে তিনটা মেয়ে ও ১টা ছেলে জন্মায়। করোনার আগে ২০১৯ সালে সৌদি আরব যান ফারুক মিয়া। পরে তার বাবা মারা যাওয়ার সাত মাস পর ফারুক দেশে চলে আসেন। করোনার কারনে তার আর বিদেশে যাওয়া হয়নি। সংসারে অভাব-অনটন এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও একাধিক সমিতি থেকে কিস্তি নিয়ে সংসার চলতো তাদের। করোনার কারণে ফারুক মিয়া কর্মহীন হয়ে যাওয়ার প্রতিমাসের কিস্তির টাকা ব্যবস্থা করতে পারতেন না। এ নিয়ে বিভিন্ন এনজিও ও বিভিন্ন সমিতির লোকজনের কথা শুনতে হতো আনোয়ারা বেগমের। এ অভাব-অনটন ও বিভিন্ন কিস্তির টাকা না দিতে পারায় ও কষ্ট সহ্য করতে না পেরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়কেরি পোঁকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে রাতে পরিবারের লোকেরা আনোয়ারাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই আনোয়ারা মারা যায়।
এব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল সূত্রে জানতে পারি একজন গৃহকর্মী কেরি পোঁকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল রাতে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছিল। আজকে ময়নাতদন্ত শেষে আনোয়ারার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
##