মোহনগঞ্জ (নেত্রকোণা) সংবাদদাতা ঃ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পলি আক্তার (২২) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবতীকে গভীর রাতে নিজ্জ্বর্ণ রাস্তা থেকে উদ্ধার করার ৩ দিন পর অনুষ্ঠানিকভাবে আজ রবিবার বিকেলে মেয়েটিকে তার পরিবারের হাতে তোলে দিয়েছে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ।
শুক্রবার রাত ২টার দিকে উপজেলার মোহনগঞ্জ-আদর্শনগর সড়কের গাড়াউন্দ নামক এলাকায় ওই মেয়েটিকে একা ঘুরাফেরা করতে দেখে জনৈক এক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে কল করলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। তবে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করার পর থেকেই তার কাছ থেকে নাম ঠিকানা পরিচয় কিছুই জানতে পারেনি। পরে রবিবার সকালে পুলিশ মেয়েটিকে ট্রলার যোগে উপজেলার গাগলাজুর বাজারে নিয়ে গেলে সোনাবানু (৬০) নামে এক নারী মেয়েটি চিনতে পেরে মেয়েটির পরিবারের লোকজনদেরকে খবর দিলে তারা ওইদিন বিকেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে থানায় আসার পর আনুষ্টানিকভাবে পুলিশ মেয়েটিকে তার পরিবারের হাতে তোলে দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে পলি আক্তারদের চার বোনের মধ্যে পলি সবার ছোট। তার অন্য তিন বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। পলি তার বিধবা মা আছিয়া বেগমের সাথেই থাকত। তবে সে গত প্রায় ৭-৮ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। এ অবস্থায় গত বছর দেরেক আগে মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে অথবা বিয়ে হলে হয়তো সে সুস্থ হয়ে যাবে এমন চিন্তা মাথায় নিয়েই তারা মেয়েটিকে একই ইউনিয়নের মান্দারুয়া গ্রামের মহসিন মিয়া নামে এক যুবকের সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের পর দিনই মেয়েটি তার স্বামীকে ত্যাগ করে তার মায়ের কাছে চলে যায়। এরপর থেকে সে প্রায়ই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যেত এবং তার আত্মীয়-স্বজনরা অনেক খোঁজাখুজি করে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসত। একইভাবে মেয়েটি গত রবিবার নিজ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে গত শুক্রবার রাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়।
মেয়েটির মা আছিয়া বেগম বলেন, আমি বাপ মরা এই পাগল মেয়েটিকে নিয়ে কত যে কষ্টে মধ্যে আছি তা কইয়া শেষ করতে পারতামনা। মোহনগঞ্জ থানার পুলিশ আমার মেয়েটারে উদ্ধার কইরা আমার বংশের ইজ্জত বাঁচাইছে। আমি পুলিশ ভাই বোনদের জন্য নামাজ পইড়া দোয়া করমু।
মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদুল হাসান বলেন, জনৈক এক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে কল করার সঙ্গে সঙ্গে আমরা থানার নারী পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। পরে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মহোদয়ের পরামর্শক্রমে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধিদেরকে অবগত করি এবং বিষয়টি নিয়ে অনলাইন পেপারে সংবাদ পরিবেশন সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেইজবুকে পোস্ট দেওয়াসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ম্যাসেজ পাঠানো হয়। তবে মেয়েটি একেক সময় একেক ধরনের কথা বললেও আমরা তার কিছু কিছু কথার উপর গুরুত্ব দেই এবং আজ রবিবার ভোরে ট্রলার যোগে তাকে নিয়ে উপজেলার গাগলাজুর বাজারে যাওয়ার পরই আমরা তাদের স্বজনদের খুঁজে পাই এবং তাকে তার পরিবারের হাতে তোলে দিতে পেরেছি।