চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: নগরীর চান্দগাঁওয়ে পুলিশের এএসআই সালাহ উদ্দিনকে চাপা দেয়া মাইক্রোবাসের চালকসহ তিন আসামিকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৯ জুন) তাদের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে পুলিশ আবেদন করলে বিচারক শফি উদ্দিন তাদের প্রত্যেককে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠান।
আদালত পুলিশের এসআই আবছার উদ্দিন রুবেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চালকসহ তিনজনকে গ্রেফতারের পর শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি-উত্তর) মোখলেছুর রহমান বলেন, ওই চালককে নির্দেশনা দেয়া ছিল, মাদকবাহী গাড়ি বাধার মুখে পড়লে পুলিশকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যেতে হবে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাইক্রোবাসের চালক মো. বেলাল ও তার দুই সহযোগী রাশেদ প্রকাশ রাসেল এবং শামসুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়। বেলাল সম্প্রতি ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হয়েছেন।তার আগের নাম উত্তম বিশ্বাস।
তিনি বলেন, এই চক্রের (মাদক চক্র) সঙ্গে যারাই জড়িত, সবাইকে গ্রেফতারর করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তাদের এই ব্যবসাটা নির্দিষ্ট কোনো সময়ের না, এটা চলমান।
তাদের যারা মাদক দেয় এবং তারা যাদের কাছে সরবরাহ করে সবাইকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব। চালক বেলাল স্বীকার করেছেন, উদ্ধার করা মাদক ও গাড়ির যে মালিক, সে তাকে নির্দেশনা দিয়েছিল যে, কোনোভাবে পুলিশের হাতে ধরা পড়া যাবে না। যদি ধরা পড়ার মতো পরিস্থিতি হয়, তাহলে পুলিশকে চাপা দিয়ে চলে যেতে হবে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সালাহ উদ্দিনকে সে হত্যার উদ্দেশ্যে গাড়িচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল।
ডিসি মুখলেছুর রহমান জানান, মাদকবাহী ওই মাইক্রোবাসটিকে পাহারা দেয়ার জন্য সামনে ও পেছনে দুটি মোটরসাইকেল চলছিল। সেগুলোর একটি জব্দ করা হয়েছে।
চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় ১১ জুন ভোর ৪টার দিকে মাইক্রোবাসের চাপায় নিহত হন এএসআই সালাহ উদ্দিন। এ সময় আহত হন কনস্টেবল মো. মাসুম। পুলিশ বলছে, মাইক্রোবাসটিতে মাদক পরিবহন করা হচ্ছিল।
চান্দগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পার্বত্য এলাকা থেকে চোলাই মদবাহী একটি কালো মাইক্রোবাস চট্টগ্রাম শহরের দিকে আসছে বলে জানতে পারেন এসআই সালাহ উদ্দিন। কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার মেহেরাজখানঘাটা পেট্রলপাম্পের সামনে মাইক্রোবাসটিকে থামার সংকেত দিলে গাড়িটি গতি কমিয়ে আনে। এ সময় গাড়িটি থেমেছে ভেবে এএসআই সালাহ উদ্দিন ও চালক মাসুম মাইক্রোবাসটির কাছে গেলে গাড়িটি গতি বাড়িয়ে দুইজনকে চাপা দেয়। আহত দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সালাহ উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ওই মোবাইল টিমের অফিসার এসআই রফিকুল ইসলাম ফোর্সসহ গাড়িটিকে তাড়া করেন। নগরীর এক কিলোমিটার এলাকায় গাড়িটি থামিয়ে চালকসহ অন্যরা পালিয়ে যান৷ পরে পুলিশ গাড়িটি জব্দ করে। ওই গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৭০০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ওই দিন বিকেলে চান্দগাঁও থানার এসআই আমির হোসেন বাদী হয়ে দুটি মামলা। ওসি বলেন, শুক্রবার বিকেলে এসআই আমির হোসেন একটি হত্যা ও আরেকটি মাদক মামলা করেছেন। দুই মামলাতেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।