অনলাইন ডেস্ক:
সাতক্ষীরায় দেয়া হচ্ছে গরুর জীবন বীমা পলিসি। দেশের মধ্যে প্রথম গবাদিপশুর জীবন বীমা পলিসি প্রদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুগ্ধ খামারিদের ঝুঁকি গ্রহণ। পাইলট প্রজেক্টের আওতায় গরুর মোট মূল্য ধার্য করে গরুর মালিকরা নির্ধারিত বাৎসরিক প্রিমিয়াম জমা দিয়ে গরুর জীবন বীমা পলিসি গ্রহণ করতে পারবেন।
সদর উপজেলার গাভা ইউনিয়নের সুবিধাভোগী খামারি প্রভাস সরদার জানান, তিনটি গরুর জন্য তিনি ৩ টি জীবন বীমা পলিসি গ্রহণ করেছেন। গরু প্রতি বাৎসরিক ২ হাজার টাকা প্রিমিয়াম জমা দিয়ে বীমা পলিসি গ্রহণ করতে হয়েছে তার। গরুর কোন অসুখ হলে চিকিৎসা খরচ দেবে বীমা কম্পানী। যদি গরুর মৃত্যু হয় তাহলে গরুর দামের হিসেবে প্রতি লাখে ৯০ হাজার টাকা দেয়া হবে গরুর মালিককে। শুরু তো হলো, এখন দেখা যাক আগামীতে কি হয়। তবে এটি চালু হলে সব খামিরাদের উপকার হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাণ ডেইরি লিমিটেড এবং ফিনিক্স ইনস্যুরেন্সের যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো গরুর জীবন বীমা কার্যক্রম শুরু করেছে। ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ লাইভস্টক প্রডাকশন ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন নামের এই প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তা করছে আন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থা এসিডিআই/ভোকা (যুক্তরাষ্ট্র)।
এ বিষয়ে এসিডিআই ও ভোকার মাঠ সমন্বয়কারী ডা. মোহাম্মদ রিদওয়ানুল হক জানান, ‘বাংলাদেশে এই প্রথম সাতক্ষীরার দুগ্ধশিল্পের সঙ্গে জড়িত খামারিদের গরুর বিনিয়োগ সুরক্ষায় গরুর জীবন বীমা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গাভা,ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন ও তালা উপজেলার খলিষখালী, ইসলামকাটি ও খলিলনগর ইউনিয়নের খামারিরা এই সুবিধা পাবেন। পরবর্তীতে অন্য উপজেলা ও জেলায় কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। চলতি মাসে পাইলট প্রজেক্ট শেষ হচ্ছে। খুব দ্রুত দ্বিতীয় ফেজে কার্যক্রম শুরু হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫০০ জন খামারিকে টার্গেট করা হলেও করোনা মাহামারির কারণে এবার ৩৩৯ জন খামারির ৩৫০টি গরু এই বীমার আওতায় এসেছে। খুরা রোগসহ বিভিন্ন কারণে গরুর আকস্মিক মত্যু হলে ফিনিক্স ইনস্যুরেন্স কম্পানি লিমিটেড বীমাকারী গরুর আর্থিক দায়ভার বহন করবে এবং ১৫ দিনের মধ্যে গরুর ৯০ শতাংশ মূল্য খামারিকে পরিশোধ করবে।
সাতক্ষীরা প্রাণ চিলিং সেন্টারের ম্যানেজার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, খামারিদের বীমা করতে গরু প্রতি যে টাকা খরচ হচ্ছে তার উপর প্রাণ চিলিং ৪০ শতাংশ টাকা ভর্তুকীর মাধ্যমে সহযোগিতা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩২৬ জন খামারির ৩৪৯ টি গরুর বীমা করতে সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। আগামীতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আশা করব এর মধ্যে অন্য খামারিরা এই বীমা সুবিধা গ্রহণ করবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, গবাদি পশুর নিরাপত্তায় দেশে এই প্রথম বীমা চালু হয়েছে। এই কার্যক্রমটি পুরোপুরি চালু হলে জেলার খামারিরা উপকৃত হবে। পাশাপাশি নতুন নতুন খামার গড়ে উঠবে।