ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে এবার মিষ্টি কুমড়ার ফলন ভালো হলেও দাম কম থাকায় চাষিদের মুখে হাসি নেই। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে বিনামূল্যে বীজ ও কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ সহায়তা দেওয়ায় এবারের ফলন ভাল হয়। কিন্তু বাজারে মিষ্টি কুমড়ার দাম না থাকায় কৃষকেরা লোকসানের মুখে পরেছে। ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়। মিষ্টি কুমড়া ক্ষেত থেকে উঠিয়ে স্তুপ করে রেখেছেন চাষিরা। দাম কম হওয়ায় অনেকেই বিক্রি করতে না পেরে জমিতেই কুমড়া রেখে দিয়েছেন। এতে করে কুমড়াগুলি দিনে দিনে পঁচে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সদর উপজেলার নারগুন, ভুল্লি, বড় বালিয়া, ছোট বালিয়া, আউলিয়াপুর, পুরাতন ঠাকুরগাঁও, আখানগর, ঢোলারহাটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। জেলায় সুইটি, মিতালি, সিটি সেরা ও সোহাগীসহ নানা জাতের মিষ্টি কুমডড়া আবাদ করা হয়েছে। এতে বীজ দিয়ে সহযোগিতা করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় জেলায় দিন দিন বাড়ছে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ। ফলন ভালো হলেও দাম কমে যাওয়ায় বর্তমানে দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া এলাকার সফল চাষী হাবিব মো: আহসানুর রহমান পাপ্পু বলেন, গত বছর ভাল ভলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছিলাম। এ মৌসুমে ২৮ একর (২ হাজার ৮শ শতক) জমিতে কুমড়া লাগাই। কিছুদিন পূর্বে বাজারে মনপ্রতি দাম ৭শ টাকা থেকে ৯শ টাকা থাকলেও বর্তমানে ১ থেকে দেড়শ টাকায় মনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে লোকসানের মুখে পরলাম। সদর উপজেলার নারগুন এলাকার কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন, ৭ বিঘা (৩৫০ শতক) জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছিলাম। আশা করেছিলাম প্রতি বছরের ন্যয় এ বছরও ভাল দাম পাব, কিন্তু বাজারের বর্তমান দামের কথা বিবেচনা করে দুশ্চিন্তায় পরেছি। খরচের টাকা উঠবে কিনা সে নিয়েই চিন্তায় পরেছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাসেল ইসলাম জানান, ২ ধরনের মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে, এর মধ্যে খরিপ-১ ইতিমধ্যে বিক্রি শেষের দিকে। এ বছর জেলায় ১ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে এ জাতের মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছিল। এছাড়াও রবি জাতের মিষ্টি কুমড়া বর্তমানে বিক্রি চলমান। জেলায় এ বছর ৯৫০ হেক্টর জমিতে এ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, জেলায় মিষ্টি কুমড়ার ভাল ফলন হয়েছে। দাম কিছুটা কম থাকলেও সামনের দিনে দাম আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি জানান, কৃষকদের মাঝে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়ার বীজ বিতরণ করা হয়েছিল। মাঠ পর্যায়েরও কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছিল।