চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: মুষলধারে বৃষ্টিতে পানিতে তলিয়ে গেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকায়। এতে ব্যাপক জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নগরবাসীরা।
আজ রোববার ভোর চারটা থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয় সকাল ৯টার পর থেকে। সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি চলছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস দুপুর একটা পর্যন্ত চট্টগ্রামে বিভাগে ৭৮৯ মিলিমিটার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রাক মৌসুমী বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে তা থেমে থেমে হবে। এই বৃষ্টিপাত দুয়েকদিন থাকতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হবে।
এদিকে সকাল থেকে বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েন সাধারণ মানুষ। সেই সাথে পানির মধ্যে যাত্রীবাহী গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে চালকদের।
নগরীর চকবাজার জামাল খান, আগ্রাবাদ বড়পোল, ছোটপোল, হালিশহর পতেঙ্গা, ইডিজেড, প্রবর্তক মোড়, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর বাকলিয়া, ষোলশহর দামপাড়াসহ বিভিন্ন নিচু এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ছোট শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষকে পানির কারণে চরম বেকায়দায় পড়তে দেখা গেছে।
চট্টগ্রামবাসীর অভিযোগ বছরের পর বছর পার হলেও জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে কোনোভাবেই পরিত্রাণ মিলছে না চট্টগ্রামবাসীর সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলার পরও কোনো উন্নয়ন না হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। তারা বলছেন সিডিএ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার শেষ হচ্ছে না। নগরবাসীরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ‘নদীর নাম চট্টগ্রাম’
সকালে অফিসগামী এক কর্মকর্তা পানিতে দাড়িয়ে বলেন, অফিসে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই, পানির কারণে আটকে আছি এখানে। আমরা চাই এটা একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে এটার একটা ব্যবস্থা করা।
মুরাদপুর এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথাই নেই। আমাদের কষ্টের কোনো সীমা নেই।
অনেক জায়গায় পানির উচ্চতা কোমরসমানও দেখা যায়। পানির কারণে নষ্ট হয়ে যায় অনেক গাড়ি। যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সৃষ্টি হয় যানজটের।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মহানগরীতে ৩০ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আরও কয়েক দিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
নগরীর জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন জানান, সিডিএ এর মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে সে প্রকল্পে বিভিন্ন খালে বাঁধ দিয়ে কাজ করার কারণে এ ভরা বৃষ্টির মৌসুমে বৃষ্টির পানি নালা হয়ে খালে যেতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যার ফলে পানি বিপরীতমুখী হয়ে স্ব-স্ব জায়গায় অবস্থান করছে এ কারণে জলাবদ্ধতা ও জলজট সৃষ্টি হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় জামালখান বাইলেইন, দেওয়ানজীপুকুর গীতাঞ্জলী কলোনি, আসকারদিঘী পাড় এবং কাজের দেউরী আংশিক নির্মাণচল এলাকায় পানি দেখা যাচ্ছে। এ এলাকাগুলো প্রধান সড়ক থেকে ১০-১৫ ফিট নিচে অবস্থান করছে। এর দায়বদ্ধতা আমরা এড়াতে পারি না। তাই এ অবস্থাকে কীভাবে সহনীয় পর্যায়ে আনা যায় সেটার ব্যাপারে কাজ করছি প্রতিনিয়ত।