Sunday , 24 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুষ্টিয়ায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিস্কার ” মাস্ক ছাড়া খুলবেনা দরজা “

কুষ্টিয়ায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিস্কার ” মাস্ক ছাড়া খুলবেনা দরজা “

আকরামুজ্জামান আরিফ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসে (কোভিড – ১৯) নাকাল বিশ্বব্যাপী। এক বছরের অধিক সময় ধরে বিশ্ববাসীকে নাজেহাল করে তুলেছে করোনা। কোন ভাবেই দমানো যাচ্ছেনা এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। প্রতিদিনই আক্রান্ত, সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে সংখ্যা। সুন্দর এ পৃথিবীর অনেকে দেশেই আকাশে বাতাসে মৃত্যুর গন্ধঁ আর মানুষের হাহাকার আর্তনাদ। ধীরেধীরে বাংলাদেশেও করোনার প্রভাব প্রকট আকার ধারণ করছে। স্বাস্থ্যবিধরা বলছেন, এই মহামারী ভাইরাস থেকে বাঁচতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধিতে নিয়ম অনুযায়ী নিয়মিত মাস্ক ব্যবহারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক অসচেতন মানুষ নিয়ম ভেঙে মাস্ক ছাড়াই অফিস, আদালত, ধর্মীয় ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে। এতে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, অন্যদিকে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাসা, অফিস, ধর্মীয় কিংবা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এক দিগন্তকারী যন্ত্র আবিস্কার করেছে ক্ষুদে বিজ্ঞানী রিয়াদ আহমেদ শিথিল। যন্ত্রটির নাম দিয়েছেন সে covid-19 safely face Mask detector in door (কোভিড- ১৯ সেফটি ফেইস মাস্ক ডিটেকটিভ ইন ডোর। যন্ত্রটির সু্বিধা গুলো হলো –  ফেস মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে না কেউ। শুধুমাত্র মুখে মাস্ক থাকলে একটি সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে এবং দরজা খুলে যাবে । মাস্ক না থাকলে মাস্ক পড়ার অনুরোধ করা হবে। মাস্ক থাকলে প্রবেশকারীকে স্বাগতম জানানে যন্ত্রটি।ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিস্কৃত যন্ত্রটি সময়োপযোগী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকারী যন্ত্র। কিন্তু অর্থের অভাবে সামনের দিকে আগাতে পারেনি শিথিল। সরকারি বা বে-সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে করোনা মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন ব্যক্তিরা।

রিয়াদ আহমেদ শিথিল বিশ বছর বয়সী এক হাস্যউজ্বল কিশোর। ক্ষুদে বিজ্ঞানী হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিত। বর্তমানে সে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলাধীন পান্টি ডিগ্রী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার জন্ম পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা নজরুল ইসলাম কম্পিউটারে অনলাইন সার্ভিস করে জীবিকার্জন করেন। মা শেলী খাতুন পেশায় একজন গৃহিণী। 
জানা গেছে, শিথিল শুধু স্বপ্নবাজ ছেলে নয় বরং স্বপ্নকে বাস্তবে রুপদানে বিশ্বাসী কিশোর। সে বিশ্বাস করে অধ্যাবসায় আর আত্মবিশ্বাসই পারে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে। বাবা নজরুল ইসলাম আর মা শেলীর অনুপ্রেরণায় আজকের এই অবস্থান শিথিল। ছোটবেলা থেকেই তার প্রবল আগ্রহ দেশ ও দশের উন্নতি সাধনে কাজ করা। স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাহসিকতা ও মানসিকতা পুঁজি করে দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে শিথিল।
আরো জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসন আয়োজনে ৪২ তম বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেয় এই ক্ষুদে বিজ্ঞানী। পান্টি কলেজ থেকে অংশ নিয়ে covid-19 safely face Mask detector in door উপস্থাপনা করেন। বিচারকদের বিচারে ১ম স্থান অর্জন করে কলেজ। তার এই সময়োপযোগী আবিষ্কারের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে ভূয়সী প্রশংসাও পেয়েছেন শিথিল।
 ইতিপূর্বে ২০১৯ সালের বিজ্ঞান মেলাতেও উপজেলায় ১ম ও জেলা পার্যয়ে ২য় হন শিথিল। সঠিক দিকর্নিদেশনা আর অর্থ অভাবে জাতীয় পার্যয়ে অংশগ্রহন করতে পারিনি সে। 
এবিষয়ে ক্ষুদে বিজ্ঞানী রিয়াদ আহমেদ শিথিল বলেন, যন্ত্রটি ফেস মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে চাইলে বাঁধা প্রদান করবে। শুধুমাত্র মাস্ক থাকলে প্রবেশ করা যাবে। মাস্ক থাকলে একটি সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে এবং দরজা খুলে যাবে। মাস্ক না থাকলে মাস্ক পড়ার অনুরোধ করা হবে। মাস্ক থাকলে প্রবেশকারীকে স্বাগতম জানানো হবে।
সে আরো বলেন, অর্থের কারনে আমার সফলতা গুলো ঝরে পড়ছে। সরকারি বা বে-সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নতুন কিছু উপহার দিতে চাই দেশবাসীকে।
শিথিলের মা শেলী খাতুন বলেন, খুব ছোট থেকেই বিজ্ঞান নিয়ে চিন্তা ভাবনা ওর। কিন্তু গরীব হওয়ায় এগোতে পারিনি। কারো সহযোগীতা পেলে ভাল কিছু করবে শিথিল।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply