Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ: বাবা-ছেলের কান্নার ছবি ভাইরাল

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ: বাবা-ছেলের কান্নার ছবি ভাইরাল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।

হেফাজতে ইসলামের তান্ডবের কারনে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন।

হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের দেওয়া আগুনে পুড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আগুনে পুড়েছে জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার ঘরবাড়িও। হেফাজতের তাণ্ডবের শিকার হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব ভবনও।

হেফাজতকর্মীদের তাণ্ডবের চিহ্ন হয়ে আছে আগুনে পোড়া স্থাপনাগুলো।

সোমবার (২৯ মার্চ) জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ও তার বাবা ওয়ালিদ হোসেনের কান্নার একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ বাবাকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া শাহাদাৎ হোসেন শোভনের ছবি দেখে আবেগাপ্লুত সবাই। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি শেয়ার করে হেফাজতের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দ্রা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

সোমবার দুপুরে শহরের সরকারপাড়ায় হেফাজতকর্মীদের হামলায় তছনছ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের বাড়ি পরিদর্শনে যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। এ সময় ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে শাহাদাৎ হোসেন শোভন ও তার বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

এর আগে রোববার (২৮ মার্চ) হরতাল চলাকালে হেফাজতকর্মীরা শাহাদাতের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে বাড়ির কয়েকটি কক্ষের আসবাবপত্র এবং একটি টিনের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়াও হেফাজতকর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের বাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রিবেল এবং আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাসেরের বাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক মো. মনির হোসেন বলেন, হেফাজতের এই তাণ্ডব পরিকল্পিত। পরিকল্পনা করেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। 

রোববার হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। তারা খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয়, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, জেলা গণগ্রন্থাগার, পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। 

পরে সোমবার পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন হেফাজতের হামলার শিকার স্থাপনাগুলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, সবগুলো ঘটনাতেই মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। সিআইডি এবং পিবিআইয়ের বিশেষজ্ঞ টিম ডাকা হয়েছে। তারা প্রতিটি ঘটনাস্থল ঘুরে আলামত সংগ্রহ করবে। প্রতিটি ঘটনার মামলা বিশেষজ্ঞ টিম তদন্ত করবে।

উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এসময় তারা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, ভূমি কর্মকর্তা কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌরমিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরসহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply