কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
অপরিকল্পিত ভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারনে কুষ্টিয়া শহরে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। শহরের অধিকাংশ টিউবওয়েল দিয়ে আররপানি উঠছেনা, এমনকি পানির অগভির পাম্পেও পানি উঠছেনা। এতে শহরে চরম পানি সংকট দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভাও ও অনেক অঞ্চলে পানি বন্ধ করে দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে পৌর কর্তৃপক্ষ জানান আমাদের মেশিনেও পানি কম উঠছে তাই সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। প্রধান নির্বাহী জানান, পানির পেসার কম থাকায় আধা ইঞ্চি লাইনে পানি যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এর সমাধান দেখছেন না অনেকেই। শহরে তীব্র পানি সংকটের কারন হিসেবে হঠাৎ কুষ্টিয়া শহরে সাবমার্সিবল টিউবওয়েল বেড়ে যাওয়াকে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। পানি নিয়ে কাজ করা মোঃ নিয়ামুল ইসলাম জানান, সাবমার্সিবল পাম্প মাটির গভীর থেকে পানি টেনে তুলছে। ফলে মাটির উপরিভাগের পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। যার কারনে টিউবওয়েল বা সাধারন পানির পাম্প আর পানির স্তর পাচ্ছেনা। এর সমাধান হিসেবে তিনি আরো জানান, দ্রুত সাবমার্সিবল পাম্প বা গভীর নলকূপ স্থাপন বন্ধ না হলে অদূর ভবিষ্যতে শহরে আরো ভয়াবহ পানির অভাব দেখা দিবে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভা জানায়, পানির সমাধানের জন্য কাজ করা হচ্ছে। আগামিতে পানির এত সমস্যা হবেনা।শহরের বাসিন্দা শেখ আকতার জানান, দ্রুত কুষ্টিয়া শহরের অন্তত দুইটি পানি শোধনাগার তৈরী করে গড়াই নদী থেকে পানি এনে এবং বৃষ্টির পানি ধরে রেখে বিশুদ্ধ করে সারবরাহ করতে হবে। তাহলে ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমবে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চৌড়হাস, মজমপুর, থানাপাড়া, আড়ুয়াপাড়া, কোর্টপাড়া, আমলাপাড়া, মিলপাড়া, হাউজিং, কালিশংকরপুর, হরিশংকরপুর, কমলাপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চলের পানির স্তর নেমে গিয়ে বেশীরভাগ নলকূপ দিয়ে একফোঁটা পানিও বের হচ্ছেনা। কুষ্টিয়া পৌরসভার একাধিক বাসিন্দা জানান, একদিকে নলকূপ দিয়ে পানি আসছেনা আবার পৌরসভাও ঠিকমত পানি দিচ্ছেনা। পানির কষ্টে আমাদের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। ২০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাবুল জানান, আমাদের টিউবওয়েলে পানি উঠেনা আবার পৌরসভার লাইন দিয়ে এক ফোঁটা পানিও আসেনা। যাদের টাকা আছে তারা টিউবওয়েলের মধ্যে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন সাবমার্সিবল পাম্প বসাচ্ছে। আমাদের মত মানুষ যাদের এত টাকা নেই তাদের অবস্থা খুব খারাপ।জেলায় পরিবেশ কর্মী মো আশরাফুল ইসলাম জানান, কুষ্টিয়া শহরে গভীর নলকূপের সংখ্যা এত বেশী বেড়ে গেছে যে খরা মৌসুমে পানির সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। এভকবে অধিক মাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারনে পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ জন্য শহরের সকল খাল পুকুর উদ্ধার করে বর্ষার পানি ধরে রাখতে হবে।কুষ্টিয়া পৌরসভার পানি বিভাগ থেকে জানানো হয়, অপরিকল্পিত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য শহরের পানির স্তর প্রায় ২০-২৫ ফুট নেমে গেছে। বাসা বাড়ীতে বর্তমানে সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করায় আশেপাশের গ্রাহকরা পানি পাচ্ছেনা। সাবমার্সিবল কেন অনুমোদন প্রশঙ্গে জানান, নতুন বর্ধীত পৌর অংশে পানির লাইন না থাকা ও শহরের অন্য জায়গায় চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ একটু কম থাকায় বিষয়টি একটু ছাড় দেওয়া হয়েছিলো। তবে দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাকরেন