আকরামুজ্জামান আরিফ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চলমান ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের আওতায় দুইটি আবাসিক হল নির্মাণ কাজে স্থগিতাদেশ জারি করেছে হাইকোর্ট। একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের রিটের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।শনিবার বাদীপক্ষের ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সুজন মিয়া স্বাক্ষরিত দুটি রিট পিটিশনে এ তথ্য জানা গেছে। রিট পিটিশন নং- ৩২৪৮ ও ৩২৪৯।এই নির্দেশের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও টেন্ডার স্থগিত করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন টেন্ডার উন্মুক্ত ও মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি এইচ এম আলী হাসান। তিনি বলেন, ‘ম্যাক উচ্চ আদালতে রিট করেছিল। তা মঞ্জুর হয়েছে। তাই এই রি-টেন্ডার দুইটির কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।’রিট পিটিশন সূত্রে জানা গেছে, রি-টেন্ডার আইডি- ৩৫৫১৪৮ ও ৩৫৫১৪৯ এর বিরুদ্ধে রিট দায়ের করেন ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদ মুরাদ। শুনানির পর গত ২৫ মার্চ মেগাপ্রকল্পের এই কাজে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ জারি করেছে হাইকোর্ট।এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড শর্ত পূরণ করার পরেও কাজ না পাওয়ার উপযুক্ত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বা দ্বৈত বেঞ্চে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদার এই আদেশ জারি করেন।এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী সুজন মিয়া বলেন, ‘২৭ নং মেইন কোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের যৌথ বেঞ্চে শুনানি হয়। এতে রি-টেন্ডার দুটির ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কেনো ম্যাককে কার্যাদেশ দেওয়া হবেনা এ মর্মে ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মুন্সী শহীদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, ‘টেন্ডার যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় স্থগিত রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ আলাদতে আপিল করবে। এজন্য ভিসি স্যার আইন প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন।’ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আইনের আশ্রয় নেওয়ার সবার অধিকার আছে। আমি আইনজীবীর মতামত জানতে চেয়েছি। এরপর যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দশতলা একটি ছাত্র ও ৫ মার্চ একটি ছাত্রী হল নির্মাণ করতে দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। যার মূল্যমান ১০৬ কোটি টাকা। এতে ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও এম/এস রহমান ট্রেডার্সসহ ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। একই বছর ১৩ ও ১৪ মে দরপত্র খোলে কর্তৃপক্ষ।জানা গেছে, ওই টেন্ডারে সর্বনিম্ন মূল্যে কাজ করতে এম/এস রহমান ট্রেডার্স সর্বনিম্ন ও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন মূল্যে কাজ করতে ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড দরপত্র জমা দিয়েছিল বলে জানা গেছে। তবে এম/এস রহমান ট্রেডার্স নির্ধারিত শর্ত যথাযথ পূরণ না করায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক কাজ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হওয়ার কথা।তবে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফের দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম। পরে একই দিনে শর্ত পূরণ সাপেক্ষেও কাজ না পাওয়ায় ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদ মুরাদ বাদী হয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে রিট দায়ের করে।