অনলাইন ডেস্ক:
প্রথম দফায় ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে। এ পর্যন্ত দেশে আসা ৭০ লাখ টিকার মধ্যে বাকি ১০ লাখ হাতে রাখা হবে দ্বিতীয় ডোজের সুবিধার জন্য। তবে চলমান নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে নিবন্ধনের কারণে টিকাদানে কাঙ্ক্ষিত গতি নাও আসতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তাঁরা বলছেন, নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা জরুরি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন যে হারে প্রতিদিন নিবন্ধন হচ্ছে তাতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির আগে এ সংখ্যা কোথায় ঠেকবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে নিবন্ধনের গতি বাড়বে বলে আশা করছেন তাঁরা।
করোনা মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম গতকাল রবিবার বলেন, নিবন্ধনের গতি দেখে মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়েও এক ধরনের হতাশাজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে। হাতে টিকা থাকলেও নিয়ন্ত্রিত নিবন্ধনের কারণে মানুষ টিকা দিতে পারবে না।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা নিয়ে বসে থাকবেন। এটা কোনো সুপরিকল্পিত পদ্ধতি বলে মনে হচ্ছে না। নিয়ন্ত্রণের কৌশল পাল্টানো জরুরি মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রয়োজনে এমন কিছু করা দরকার, যাতে করে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে যারাই টিকাকেন্দ্রে যাবে তাদের টিকা দেওয়া হবে। তবে টিকাদানের আগে অবশ্যই তাদের শারীরিক সক্ষমতার বিষয়টি দেখতে হবে।
গত দুই দিন ধরে দৈনিক ১০ হাজার করে নিবন্ধন হচ্ছে বলে জানান তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই তালিকা নিয়ন্ত্রণ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নিবন্ধনের গতি আরো বাড়বে আশা করি। নয়তো এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে জাতীয় কমিটি গতি বাড়ানোর জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মানুষের মধ্যেও আগ্রহের একটা ব্যাপার রয়েছে। বিষয়টি একটু ধীর মনে হলেও আশা করি ঠিক হয়ে যাবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (টিকাদান) ডা. শামসুল হক জানান, আজ (গতকাল) পর্যন্ত ৫৮ জেলায় টিকা পৌঁছে গেছে। টিকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এমনটাই জানিয়েছে। তারা মোট ৬১ জেলায় টিকা পৌঁছাবে। আগামীকালের (সোমবার) মধ্যে তা সম্পন্ন হবে। এরপর ঢাকা ও পাশের আরো দুটি জেলায় দু-তিন দিনের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। ফলে ৭ ফেব্রুয়ারির আগে টিকা সরবরাহ শেষ হবে।
ডা. শামসুল বলেন, ‘আমাদের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয়ভাবে টিকা দেওয়ার শুরুর পর থেকে প্রথম এক মাসে আমরা ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেব। বাকি ১০ লাখ আমরা আপৎকালীন হিসেবে রেখে দেব।’
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকাসংক্রান্ত মিডিয়া সেলের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, যে ৬০ লাখ টিকা সারা দেশে গেছে তা ৬০ লাখ মানুষকে দেওয়া হবে। পরের মাসে দেওয়া হবে ৫০ লাখ মানুষকে, এরপরের মাসে আবার দেওয়া হবে ৬০ লাখ মানুষকে। যেহেতু একজনকে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে, তাই কোনো সংকট হবে না।