অনলাইন ডেস্ক:
শক্তিশালী বিরোধী দল গণতন্ত্রের জন্য জরুরি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দক্ষ নেতৃত্বের অভাবে বিরোধী দলগুলো জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, এখন বিরোধী দল বলে যে দলগুলো রয়েছে, তাদের নেতৃত্ব সেভাবে নেই বলে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসটা তারা অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল অবশ্যই দরকার। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর নামে একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন এবং জাতির পিতার ভাষণের ডিজিটাল সংকলন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। গতকাল রবিবার জাতীয় সংসদ সচিবালয় আয়োজিত ‘মুজিববর্ষের কার্যক্রম’ মুজিববর্ষ ওয়েবসাইট ২০২০-২১ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অডিও ভাষণের ডিজিটাল সংকলনের উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সংসদের ভূমিকা রয়েছে। কারণ সংসদ এমন একটি জায়গা, যেখানে জনপ্রতিনিধিরা আসেন এবং জনগণের কথা বলার সুযোগ পান।’
সংসদের বিরোধী দলে থাকাকালে তাঁদের কী ধরনের সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়েছে সে সবের অভিজ্ঞতা তাঁর দল এবং তাঁর নিজের রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কারণে আমরা কিন্তু আর সে ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করি না।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য নাবিল আহমেদও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জাতির পিতা তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন এবং এই দলের যখন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তখন দলকে সুসংগঠিত করার জন্য মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন ছিল, একদিন এই বাঙালিদের একটি জাতি হিসেবে স্বাতন্ত্র্য দেবেন এবং স্বতন্ত্র রাষ্ট্র করে দেবেন। তিনি তা করেও ছিলেন। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়নের মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্য নিয়েই তাঁর সরকার ও দল কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ২০২০ সাল উদযাপন উপলক্ষে আমরা যেসব কর্মসূচি নিয়েছি, সেসবই জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ উপলক্ষে বৃক্ষ রোপণ এবং সংসদের বিশেষ অধিবেশন আয়োজন উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, আজকে মুজিববর্ষে ওয়েবসাইট চালু করা হলো। তা ছাড়া ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ভাষণগুলো নিয়ে এখানে সংকলন প্রকাশিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তাঁর সরকার আরো কিছু কর্মসূচি নিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে সেসব কর্মসূচি বিস্তারিতভাবে করা সম্ভব হবে। আর তাই মুজিববর্ষের কর্মসূচি তাঁর সরকার ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের বিজয় দিবস পর্যন্ত অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সুষ্ঠুভাবে সংসদ পরিচালনার জন্য স্পিকারকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আপনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে এই সংসদকে পরিচালনা করছেন। যে কারণে আমাদের সংসদের ভাবমূর্তি আজ আন্তর্জাতিকভাবেও বৃদ্ধি পেয়েছে।’ তিনি বারবার নির্বাচিত করায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা চাই দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক এবং জাতির জন্য আমরা কাজ করার সুযোগ পাই।’