কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
শীত মৌসুম জুড়েই কুষ্টিয়ার মিরপুর, কুমারখালী ও সদর উপজেলার কয়েকটি জায়গায় খেজুরের রস নামানো, গুড় তৈরি ও কেনাবেচার ব্যবসা জমে। তবে শহরবাসীর গুড় কেনার পছন্দের জায়গা বাইপাস, কলাবাড়িয়া ও কুষ্টিয়া চিনিকল এলাকা, যা শহর থেকে মাত্র পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার দূরে।
সেখানে পথের দুই পাশে সারি সারি খেজুরগাছ। রস নামিয়ে মাঠেই গুড় তৈরি হয়। ক্রেতারা খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া নিজ চোখে দেখে কিনতে পারেন। সম্প্রতি ভোরে বাইপাস সড়ক ও কলাবাড়িয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রস ও গুড় কিনতে ভোরেই উপস্থিত ক্রেতারা। সেখানে গুড়ের কেজি মানভেদে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আর শুধু রসের হাঁড়ি ২০০ টাকা। স্থানীয় শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম কলাবাড়িয়া এলাকায় চিনিকলের খেজুর গাছগুলো প্রতিবছর ইজারা নেন।
তিনি জানান, এবারও তিনি চিনিকলের কাছ থেকে ৫২ হাজার টাকায় প্রায় ৪০০ খেজুরগাছ ইজারা নিয়েছেন। এর বাইরে ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৮০টি গাছ ইজারা নিতে তাঁর ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে যাওয়া কয়েকজন গাছি মজুরি ভিত্তিতে সেখানে দিনরাত কাজ করেন। খেজুরের রস আহরণ শেষে জ্বালিয়ে যে খাটি গুড় তৈরী করা হয় তা বাজারজাত করে থাকেন কৃষিখাত নামে একটি ফেসবুক পেজ গ্রুপ। যেটি পরিচালনা কর থাকেন সাংবাদিক এস এম জামাল। তিনি সাংবাদিকতার পাশাপাশি এই খাঁটি গুড় ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জেলায় কুরিয়ারের মাধ্যেমে পাঠিয়ে থাকি।
তিনি বলেন, মান ভেদে আড়াইশ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করে থাকি। তার শুধু গুড়ই নয়, আরও বিভিন্ন সময়ে সিজনাল ফল নিয়েও কারবার রয়েছে। গাছি আলম ঢালী বলেন, শীত মৌসুমে তাঁরা চার মাস খেজুরগাছ কাটা ও গুড় তৈরির কাজ করেন। থাকেন কুষ্টিয়া চিনিকলের পরিত্যক্ত একটি ভবনে। দিনে মজুরি ৫০০ টাকা। এক মৌসুমে একেকজনের আয় দাঁড়ায় ৬০ হাজার টাকা। বাইপাস এলাকায় চারজন গাছির আরেকটি দল নাটোর থেকে যাওয়া। তাঁদের একজন শিহাব আলী ৪০০ গাছ ইজারা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, এক মৌসুমে ইজারা মূল্য বাবদ ৫২ হাজার টাকা, তিনজন কর্মীর মজুরি ও নিজের খরচ শেষে এক লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন তিনি।