অনলাইন ডেস্ক:
গার্মেন্টসের স্টাফ বাসে যাত্রী বেশে ডাকাতির ঘটনায় ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা জেলা পুলিশ। বুধাবার দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার দুর্গম চর বাচামারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন দৌলতপুর থানার মোঃ সুমন মিয়া (২৫), মোঃ শরীফ মোল্লা (২০), মোঃ মুহিত শেখ (২২), মোঃ আলমগীর হোসেন (২৮), মোঃ রাজীব হোসেন (২১)।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৪ জুলাই রাত অনুমান দুইটায় গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট যাওয়ার জন্য সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে একটি অফিস স্টাফ লেখা বাসে উঠেন মামলার বাদী মাইদুল ইসলাম। বাসে উঠার সাথে সাথে বাস চালকসহ অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জন লোক বাদীর হাত, পা, চোখ বেধে বাসের মাঝে শুইয়ে এলোপাথারি মারধর এবং ভয়ভীতি দেখাইয়া তার নিকট থেকে মোবাইল সেট, কাপড় চোপড়, নগদ টাকা এবং বিকাশে থাকা টাকা সহ প্রায় ২৬ হাজার টাকা নিয়ে বাদীকে হাত, পা বেধে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সাভার থানার তুরাগ নদীর পাড় সংলগ্ন রিকু ফিলিং স্টেশন এর বিপরীত পাশে ফেলে রেখে বাস নিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে ভিকটিম মাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাভার থানায় অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করে একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করে। মামলা নং – ৫৬ , তারিখ- ২৫/১০/২০২০ ইং, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ দঃ বিঃ ।
মামলাটি পিবিআই স্বউদ্যোগে পিবিআই ঢাকা জেলার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরানকে তদন্ত ভার প্রদান করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানান, গত কোরবানীর ঈদের কিছুদিন আগে এই গ্রুপটি গার্মেন্টসের স্টাফ বাস নিয়ে ডাকাতিতে নামে। মুলত গার্মেন্টস ছুটির পর শ্রমিকদের পৌছে দিয়ে মধ্য রাতে তারা এই কাজটি করে। বাসটি চালাতেন লালন সরদার। এর আগে লালনকে গ্রেপ্তার করে তার কাছ থেকে বাদীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। সে আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান আরো জানান, এর আগে লালন এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধামরাই থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বাস এবং সহযোগী আলমগীর নামের এক ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি জানান, উক্ত ঘটনায় মোট ১১ জন ডাকাত যাত্রী বেশী গাড়িতে ছিল। লালনকে গ্রেফতারেরে পর এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়। অবশেষে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার দুর্গম চর বাচামারা এলাকা থেকে উক্ত চক্রের মূল হোতা আলমগীর সহ ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করি।
এই চক্রের সেকন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করে মুহিত। সে হেলপার হিসেবে গাড়ির গেইটে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলে গেইট লাগিয়ে দিয়ে ভেতরে লাইট বন্ধ করে দিত। মারধর এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা পয়সা মোবাইল হাতিয়ে নিত আলমগীর। যাত্রীদের মারধর করে হাত পা চোখ বেধে সাভার এলাকার রাস্তার পাশে অপেক্ষাকৃত নির্জন জায়গায় ফেলে দিত তারা।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। পাশাপাশি উক্ত ঘটনায় আরো বেশ কয়েকজন ডাকাতের নাম প্রকাশ করেছে। তাদেরকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
উক্ত ঘটনায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ছিনতাই এবং মাদক মামলার অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় পলাতক অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।