অনলাইন ডেস্ক:
বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ মাঘের প্রথম দিন। এই দিনেই পুরান ঢাকায় পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব, যা পৌষসংক্রান্তি বা ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত। তবে এবারের আয়োজনটি হবে বর্ণাঢ্য। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) উদ্যোগে আজ আকাশে উড়বে ১০ হাজার ঘুড়ি।
বৃহস্পতিবারও (১৪ জানুয়ারি) পুরান ঢাকার আকাশে শোভা পাবে নানা রঙ আর বাহারি ঘুড়ি। এদিন দুপুর দুইটা থেকে শুরু হয়ে ঘুড়ি উৎসব চলবে রাত আটটা পর্যন্ত। “এসো ওড়াই ঘুড়ি, ঐতিহ্য লালন করি” স্লোগানে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই উৎসব একযোগে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে আয়োজন করা হবে।
মূলত পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া, মুরগীটোলা, ধূপখোলা, দয়াগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, নারিন্দা, সূত্রাপুর, কাগজিটোলা, বাংলাবাজার, লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, ধোলাই খাল, শাঁখারি বাজার, রায়সাহেব বাজার, নবাবপুর, বংশাল, নাজিরাবাজার, তাঁতীবাজার এবং লালবাগ এলাকার মানুষ স্যাকারাইন উৎসবে দিনব্যাপী ঘুড়ি উড়ান। আয়োজন করেন নানা খাবারের।
বর্তমানে এ উৎসবে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানো। মধ্যরাত পর্যন্ত এসব এলাকায় চলে আতশবাজির খেলা। উৎসবকে মাথায় রেখে গত এক সপ্তাহ পুরান ঢাকার বায়ান্ন বাজার তেপ্পান্ন গলির অধিকাংশ গলিতে আর খোলা ছাদে পড়েছে ঘুড়ির সুতায় মাঞ্জা দেওয়ার ধুম।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি ডিএসসিসির জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, আয়োজন সফল করতে ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আয়োজনের অংশ হিসেবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের ৭৫ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত আসনের ২৫ জন মহিলা কাউন্সিলরকে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির পক্ষ হতে ১০০ করে ঘুড়ি সরবরাহ করা হবে। পরে কাউন্সিলরগণ সেসব ঘুড়ি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের জনসাধারণের মাঝে বিলি করবেন, যারা কমিটি নির্ধারিত মাঠ কিংবা বাড়ির ছাদে অবস্থান নিয়ে আকাশে ঘুড়ি ওড়াবেন।
উৎসব আয়োজন প্রসঙ্গে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ বলেন, সাকরাইন উৎসব পুরান ঢাকার ঐতিহ্য। কালের পরিক্রমায় এই ঐতিহ্য পুরান ঢাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু যান্ত্রিক জীবনের বাস্তবতায় আমরা অনেকেই ভুলতে বসেছি, সাকরাইন উৎসব – আমাদের ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাই, ঢাকার ঐতিহ্য লালন, সংরক্ষণ এবং প্রসারে ডিএসসিসির মেয়র মহোদয় যে রূপরেখা ঘোষণা করেছেন সে ধারাবাহিকতায় আমরা প্রথমবারের মতো এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা কাউন্সিলরদের কাছে ১০০ করে মোট ১০ হাজার ঘুড়ি সরবরাহ করব। সেসব ঘুড়ি আগ্রহী লোকজনের মাঝে বিতরণ করা হবে। তারপরও কেউ বাদ পড়লে সংশ্লিষ্ট আগ্রহী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ নিজ বাড়ির ছাদ থেকে নিজের ঘুড়ি নিয়ে এই উৎসবে অংশ নিতে পারবেন। এই উৎসব সকলের জন্য উন্মুক্ত, সার্বজনীন। শিগগিরই একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের বরাতে উৎসবের খুঁটিনাটি জনগণকে অবহিত করা হবে।