অনলাইন ডেস্ক:
পেশার তাগিদেই সাংবাদিকদেরও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সেবা নিতে হয়। তেমনি এক প্রতিষ্ঠান তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি)। এটি সচিবালয়ের ভেতরে অবস্থিত তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। খবর সংগ্রহের জন্য রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিদর্শন ও অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পিআইডির কার্ডধারী হতে হয়। আর স্থায়ী-অস্থায়ী সেই কার্ড সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এই পিআইডি। এত দিন এই কার্ড পেতে সাংবাদিকদের অশেষ ভোগান্তি পোহাতে হতো। বছর দেড়েক হলো অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। সাংবাদিকদের সেই ভোগান্তির অবসান হয়েছে।
পিআইডি অফিসে কার্ডের জন্য আবেদন করলে আগে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঘুরতে হতো। লেগে না থাকলে আবেদনের কপিই খুঁজে পাওয়া যেত না। সেখানে এখন যোগ্যরা আবেদন করার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই কার্ড পেয়ে যাচ্ছেন।
একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক বলেন, ‘পিআইডি কার্ড সেবায় যে পরিবর্তন এনেছে তা আমার চিন্তার বাইরে। কার্ড রিনিউ করতে গিয়ে সেবার যে চিত্র দেখলাম তাতে আমি অভিভূত।’ একইভাবে ই-মেইলে যোগাযোগ করেই কাঙ্ক্ষিত সেবা পেয়ে খুশি সারাবাংলা ডটনেটের বিশেষ প্রতিনিধি এম এ কে জিলানী।
পিআইডিতে সেবার চিত্র বদলের কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে প্রতিষ্ঠানটির পুরো টিমের। তবে দুই কর্মকর্তার আন্তরিকতা ও পরিশ্রম এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন বর্তমানে তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (পিআইও) সুরথ কুমার সরকার। অন্যজন হলেন আশরোফা ইমদাদ। তিনি পিআইডির সেবার মান বাড়াতে জুনিয়র অফিসারদের মধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সুরথ কুমার সরকার বলেন, ‘সাংবাদিকরা তাঁদের কার্ডটা দ্রুত পেয়ে যাবেন, এটাই তো নিয়ম হওয়ার কথা। আগে কী হতো জানি না। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পেশাদার সাংবাদিকদের কার্ডসংক্রান্ত বিষয়সহ সব বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতার চেষ্টা করছি। কতটুকু পারছি সেবা গ্রহণকারীরা ভালো বলতে পারবেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে আশরোফা ইমদাদ বলেন, ‘প্রথমদিকে অনেক কিছুই সহ্য করতে হয়েছে। অপেশাদারদের কার্ড দেওয়া বন্ধ করায় প্রথম দিকে অনেকে হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রী-সচিব পর্যন্ত অভিযোগও জমা পড়েছে। তবে আমরা সিনিয়র স্যারদের নির্দেশনা অনুযায়ী সেবার মান বাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি। সহকর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা কাজের একটা ধারা তৈরি করতে পেরেছি। এখন ঝামেলা অনেকটা কমে গেছে। মুজিববর্ষে সেবার মান বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ ছিল। কতটুকু পেরেছি সাংবাদিকরা ভালো বলতে পারবেন।’
পিআইডির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভুয়া নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক পরিচয়ধারী অপেশাদার কিছু মানুষের জন্য পেশাদার সাংবাদিকদের দুর্নাম হচ্ছে। আগে এরা পিআইডি থেকে বিভিন্নভাবে কার্ড পেয়ে যেত। সুরথ কুমার দায়িত্ব নিয়েই এসব কার্ড দেওয়া বন্ধ করেন।’ আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের অনেকের তদবিরে একটা সময় চাপের মুখে কার্ড দেওয়া বেড়ে গিয়েছিল। এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’