কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নে ২৪৯ জন দুস্থদের মাঝে পঁচা, গঁন্ধ, ছত্রাকযুক্ত ও নিম্নমানের ভিজিডি চাল বিতরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রোববার দুপুরে সরেজমিন পরিষদ চত্ত্বরে গেলে এমন অভিযোগ করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব, সদস্য ও ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, চাপড়া ইউনিয়নে ভিজিডি চালের ভাতাভোগী রয়েছে ২৪৯ জন। বর্তমান চেয়ারম্যান মনির হাসান রিন্টু সাময়িক বরখস্ত থাকায় এক মাস ২০ দিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দাঁয়িত্ব পালন করেন মনোয়ার হোসেন লালন। ডিসেম্বর মাসের চালের ডিও প্রস্তুত ও কুমারখালী সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে চাল বুঝে নেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। কিন্তু ডিসেম্বর মাসের চাল বিতরণের পর পঁচা, গঁন্ধ, ছত্রাকযুক্ত ও নিম্নমানের হওয়ায় ভুক্তভোগীরা চাল ফেরত দিয়ে ভাল চাল নেওয়ার জন্য পুনরায় পরিষদ চত্ত্বরে ভিড় জমায়। আরো জানা গেছে, চালের বস্তার এক পাশে সরকারি লগো এবং একপাশে মিলারের ঠিকানা থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ বস্তায় মিলারদের নাম ঠিকানা নাই। ঠিকানাবিহীন বস্তা গুলোতেই এমন নিম্নমানের চাল ছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শাহানাজ বলেন, আমার স্বামী একজন ভ্যান চালক। গরীব বলে প্রতিমাসে এক বস্তা করে চাল পাই। কিন্তু এবারের চাল খুব খারাপ, পঁচা,গঁন্ধ। গত মাসের চালও ছিলও খারাপ। পাইকপাড়া থেকে আগত নাজমা বলেন, চালের রং লাল, গঁন্ধ, পঁচা। ছত্রাক পড়া।ভাত রাঁধলে খুব গঁন্ধ হয়। খাওয়া যায়না।পাহাড়পুর গ্রাম থেকে আসা হামিদের স্ত্রী পারুল বলেন, চাল জাগোজাগো গঁন্ধ। ২/৩ বার ভাল চাল পেয়েছি। কিন্তু এবার খুব খারাপ চাল দিয়েছে।
এবিষয়ে চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শহিদুল বলেন, কুমারখালী সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে ২৪৯ বস্তা সেলাইকরা ভিজিডি চাল এনে ভুক্ত ভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু চাল পঁচা,গঁন্ধ ও নিম্নমানের হওয়ায় ফেরত দিচ্ছে ভুক্তভোগীরা। চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হাসান রিন্টু বলেন, চালের মান খুবই খারাপ। ছত্রাক পড়ে গেছে। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ডিসেম্বর মাসের ভিজিডি চালের ডিও ছিল সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আর চাল আসে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে। চালের বিষয় খাদ্য গুদাম আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই ভাল বলতে পারবেন।
চালের এমন বিষয়ে চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন লালন বলেন, কুমারখালী সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে যে চাল দিয়েছে, তাই বিতরণ করা হয়েছে। তবে চালের মান খুব খারাপ। চালের ব্যাপারে খাদ্য গুদামের লোকজনই ভাল বলতে পারবেন। তবে এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি কুমারখালী খাদ্য গুদামের নিয়ন্ত্রক (ওসি এল এস ডি) জামসেদ ইকবাল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, চেয়ারম্যানের মাধ্যম দিয়ে চালের বিষয়ে জানতে পেরেছি। কেন এমন হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।