Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
৪ মেয়ের জনক দুলাল মিয়া রিক্সা হারিয়ে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন
--প্রেরিত ছবি

৪ মেয়ের জনক দুলাল মিয়া রিক্সা হারিয়ে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর)প্রতিনিধি: ৪ মেয়ের জনক দুলাল মিয়া, অসহায় ও গরীব রিক্সা চালক। সম্প্রতি নিজের ছোট বোন অসুস্থ্য হলে নিজের রিক্সাটি বিক্রি করে বোনের চিকিৎসায় পুরো টাকা ব্যয় করে দেন। পরবর্তিতে বিভিন্ন স্থান থেকে অধিক সুদে ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে একটি অটোরিক্সা ক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করলেও গত বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রতারকের খপ্পরে পড়ে খুইয়েছেন নিজের সর্বস্ব। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দু-মুঠো খাবার কিনে খাওয়ার উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে রাস্তায় রাস্তায় পথেরধারে কেঁদেকেটে বুক ভাসাচ্ছেন রামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ চন্ডিপুর গ্রামের দাঈ বাড়ীর মৃত আনা মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৬৫)। 
কান্নাজড়িত কণ্ঠে দুলাল মিয়া আজ শুক্রবার সকালে জানান, পুরাতন অটো রিক্সাটি বিক্রি করে আপন ছোট বোনের চিকিৎসায় ব্যয় করেন। পরবর্তিতে স্থানীয় লোকজন ও কিস্তিতে টাকা তুলে ১৬ দিন আগে সোনাপুর বাজার থেকে প্রায় ৮৫হাজার টাকা দিয়ে একটি ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা ক্রয় করি।গত বুধবার সকালে পদ্মা বাজার থেকে পরিচিত একজন যাত্রীকে রামগঞ্জ হিমালয় পরিবহন কাউন্টারে নামিয়ে দিয়ে ফিরে আসতে জ্যাকেট পরিহীত একজন লোক তাকে নিয়ে কচুয়া ক্বারী সাহেব ব্রীজ থেকে সামান্য উত্তরে একটি বাড়ীর সামনে যাওয়ার জন্য ভাড়া করেন। সেখানে যাওয়ার পর রাস্তার অদুরে নির্মানাধীন একটি বাড়ী তার বলে জানান। কিছুক্ষণ পর সেখানে আরো একজন লোক আসলে বাড়ীর কাজ করার লোকজনকে চা-নাস্তা খাওয়ার টাকা দিয়ে উক্ত ব্যক্তিকে সোনাইমুড়ী যাওয়ার জন্য বলে আবারও তার অটোরিক্সায় উঠে পড়ে। কিছুদুর আসার পর অটো রিক্সার যাত্রী হঠাৎ তার রিক্সাটি থামিয়ে বলেন, যে লোকটাকে একটু আগে টাকা দেয়া হয়েছে, তাকে গিয়ে বলেন আপনাকে সোনাইমুড়ি যেতে হবে না আমি আপনার রিক্সার পাশে দাঁড়াচ্ছি। বৃদ্ধ দুলাল মিয়া কিছু না বুঝে হেঁটে ঐ বাড়ীর সামনে গিয়ে কাউকে না দেখে লেবারদের বিষয়টি জানান। এসময় বাড়ীর কাজ করা লেবার বলে এ বাড়ীটিতে এ রকম কোন লোক নেই। বৃদ্ধ দুলাল মিয়া হন্তদন্ত হয়ে নিজের অটোরিক্সার কাছে ফিরে এসে দেখেন তার অটোরিক্সাসহ দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি উধাও।পাগলের মতো দিগ্বিদিক ছুটে একবার বাড়ীটিতে যায় আবার অটো রিক্সা রাখায় ফিরে আসে। কাঁদতে কাঁদতে স্থানীয় লোকজনদের বিষয়টি খুলে বললেও কোন প্রতিকার পায়নি। আজ দুই দিন দুলাল মিয়া অনেকের কাছে হাত পেতেছেন, নিজের চুরি যাওয়া অটোরিক্সাটি ফিরে পেতে পাগলের মতো সবার কাছে ছুটে গেছেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আজ সকালে  কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমাকে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। মানুষের কাছ থেকে ধার করা টাকা, কিস্তির টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো বাবা। স্ত্রী-আর মেয়েদের নিয়ে আমাকে পথে বসতে হবে। আমার কোন ছেলে নেই- আমি কার কাছে যাবো। আমরা কি পারিনা, দুলাল মিয়ার মতো এ বৃদ্ধ বাবার সহযোগীতায় এগিয়ে আসতে? তার পরিবারের জন্য যার যার সাধ্যমতো তার সহযোগীতায় এগিয়ে আসতে। সকল ধণাঢ্য ব্যক্তিসহ মানবিক মানুষগুলোর কাছে করজোড়ে অনুরোধ করছি আমরা আমাদের সাধ্যমতো এ বৃদ্ধ বাবার জন্য কিছু করি। তার পরিবারের পাশে দাঁড়াই।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply