কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত মাদ্রাসার দুই শিক্ষক আল-আমিন ও ইউসুফ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে বিচারক দেলোয়ার হোসেনের এজলাসে শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ওই দুই শিক্ষক এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।জবানবন্দিতে মাদ্রাসা শিক্ষক ইউসুফ আলী জানিয়েছেন, তিনি মাদ্রাসা ইবনে মাসউদ কুষ্টিয়াতে হেফজ বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ওই বিভাগের ১৭ জন ছাত্র পড়াশোনা করে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত আবু বক্কর নাহিদ একই বিভাগের শিক্ষার্থী। ঘটনার দুই তিন দিন আগে ইউসুফসহ আবু বকর ও রাহিদ কুষ্টিয়ার মার্কেটে যান। তাদের মার্কেটে যাওয়া আসার পথে শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি তাদের নজরে পড়ে। এরপর গত শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে আবু বক্কর ও নাহিদের যুক্ত থাকার বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। পরে তাদের মাদ্রাসা থেকে নিজ নিজ বাড়িতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ভাঙচুরের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ তাদের দেখালে অভিযুক্ত দুজন কে চিনা সত্ত্বেও স্বীকার করেননি।অপর শিক্ষক আলামিন একইভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, শিক্ষক আলামিনসহ ওই মাদ্রাসায় সবাই মোবাইল ব্যবহার করতেন। মোবাইলে তারা ওয়াজ শুনতেন। বিশেষ করে মামুনুল হক, হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবীসহ অন্যদের ওয়াজ শুনতে ভালো লাগতো। এ মাদ্রাসা শিক্ষকও একইভাবে অভিযুক্ত দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা থেকে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে সরে যেতে পরামর্শ দেন।পরবর্তী সময়ে সিসিটিভিতে ধারণ করা ফুটেজ নিয়ে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তারা কোনো কিছু না বলে চুপ থাকেন।কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দুই মাদ্রাসা শিক্ষক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই মাদ্রাসা ছাত্রের জড়িত থাকার বিষয়টি জানা সত্ত্বেও তা প্রকাশ করেননি। উল্টো তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন। এ ঘটনায় মামলা হলে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ তাদের দুই শিক্ষককেও গ্রেফতার করে পুলিশ। অধিকতর তদন্তের জন্য রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়।গত ৫ ডিসেম্বর মধ্যরাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলায় গত ৭ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।