অনলাইন ডেস্ক:
‘ফাইভজি’ সহায়ক শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশকে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন প্রকল্পসহ চারটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে; যেখানে দুই হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সভায় যুক্ত হন। সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম ভার্চুয়ালি সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
তিনি জানান, মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে পাওয়া যাবে এক হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদ, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরনো ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধনীতে প্রকল্পের মূল খরচ ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সংশোধনীতে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২২ সাল পর্যন্ত।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ প্রকল্প এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ প্রকল্পের সংশোধনীতে ব্যয় দুই হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে তিন হাজার ৩১৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। কাজ ২০২০ সালে হওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত। এই মন্ত্রণালয়ে নতুন অনুমোদন পাওয়া আরেকটি প্রকল্প হলো ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন’। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ৬৯৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধনী আনা হয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যাস অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রকল্পে। সেখানে মূল খরচ ছিল দুই হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে শুধু প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৭৪৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
একনেক সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহ্মুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।