অনলাইন ডেস্ক:
কভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ থেকে দেশবাসীকে রক্ষার জন্য বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এ জন্য মোবাইল কোর্টগুলোকে আরো কঠোর হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার সকালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই ব্যাপারে আলোচনা হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সার্বিক কল্যাণ এবং তাঁদের পেশাদারি নিশ্চিত করতে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০২০’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদনও দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, বিভাগীয় কমিশনাররা জানিয়েছেন, মাস্ক ব্যবহার না করায় সাত দিন ধরে তাঁরা ব্যাপক হারে জরিমানা করছেন। গতকালও কয়েক হাজার লোককে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আরো এক সপ্তাহ দেখতে, মানুষকে আরো মোটিভেশন করতে। তারপর আরেকটু স্ট্রং পানিশমেন্টে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, যেভাবেই হোক মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে তিনি আরো বেশি প্রচার চালাতে বলেছেন। ‘ফোর্স করো যেভাবে হোক মানুষ যেন মাস্ক ব্যবহার করে। মাস্ক ব্যবহার না করলে যতই ভ্যাকসিন বলেন আর ওষুধ বলেন প্রটেকশন কোনো কাজে আসবে না,’ প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্ধৃতিরও উল্লেখ করেন মন্ত্রিপরিষদসচিব।
যে কারণে মন্ত্রিসভার অনির্ধারিত আলোচনায় আবারও মাস্কের বিষয়টা খুব স্ট্রংলি এসেছে, বলেন তিনি।
স্ট্রং পানিশমেন্ট কী হবে, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘হয়তো জরিমানা বাড়তে পারে, এখন এক হাজার বা ৫০০ টাকা জরিমানা করছে, সেটা পাঁচ হাজার টাকা করে দিল। এ রকম আমরা আরেকটু স্ট্রং ওয়েতে যেতে বলেছি। যাঁরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন সঙ্গে মাস্কও নিয়ে যাবেন, যাতে মানুষকে জরিমানা করার সঙ্গে সঙ্গে একটা মাস্ক দিয়ে দেওয়া যায়।’
রবিবার বিভাগীয় কমিশনারের মিটিংয়ে ধর্মসচিব ছিলেন, তাঁদের বলে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাসচিবকেও বলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে আরো ব্যাপক হারে প্রচারণার জন্য এবং এ ক্ষেত্রে মিডিয়াও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, বলেন তিনি।
ঢাকা শহরে রবিবার ৩৭টি জায়গায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘একেক জায়গায় একেক রকম জরিমানা করা হচ্ছে, কোথাও ৫০০ টাকা, কোথাও এক হাজার টাকা।’
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঢাকা বিভাগে যেভাবে ছড়াচ্ছে বাইরে সেই পরিমাণে ছড়াচ্ছে না। ঢাকা শহরে গত ১৫ দিন আগে যেখানে ৩০০ রোগী ছিল রবিবার বোধ হয় ৬০০ হয়ে গেছে।
রাজধানীর হাসপাতালে রোগী বৃদ্ধির হার দেখে সাম্প্রতিক সময়ে কভিড হয়তো একটু বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০২০’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘অসচ্ছল ও অক্ষম শিল্পীদের কল্যাণ ও চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনটি তৈরি করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই আইনের মূল লক্ষ্য হবে, চলচ্চিত্রশিল্পীদের কল্যাণ সাধন, তাঁদের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ, অসচ্ছল, পেশাগত কাজে অক্ষম শিল্পীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান ও অসচ্ছল শিল্পীদের মৃত্যু হলে তাঁদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান।’ সচিব বলেন, ‘এই ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য একটি পরিচালনা বোর্ড থাকবে। যার চেয়ারম্যান থাকবেন তথ্যমন্ত্রী। সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকও থাকবেন এখানে।’
সূত্র : বাসস।