Friday , 22 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুষ্টিয়া হাউজিং বি ব্লকের হাবিবসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সখিনা বেওয়ার জমি জালিয়াতির অভিযোগ

কুষ্টিয়া হাউজিং বি ব্লকের হাবিবসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সখিনা বেওয়ার জমি জালিয়াতির অভিযোগ

 কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এস্ট্রেটের বি ব্লকের ৩৪৫ হোল্ডিং নং বাড়ির মালিক মৃত সখিনা বেওয়ার জমি জালিয়াতি করে দখলের অভিযোগ উঠেছে বর্তমানে উক্ত বাড়িতে দখল করে বসবাস করা মেহেরপুর জেলার কুদালকান্দী এলাকার মৃত মওলা বক্সের ছেলের মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব সহ তার ৬ ভাইদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,হাউজিং এস্ট্রেটের বি ব্লকের ৩৪৫ নং হোল্ডিংয়ের জায়গা মৃত সিদ্দিকীর ওস্তাগীর স্ত্রী মৃত সখিনা বেগমের নামে ৯৯ বছরের লিজ নেওয়া রয়েছে। ১৯৮৩ সালের ২৫ শে জুলাই সখিনা বেওয়ার নামে বি-৩৪৫ নং বাড়ির জায়গা হস্তান্তর করেন হাউজিং অফিস। সেখানে সখিনা বেওয়ার একটি পাকা বাড়িও রয়েছে।সখিনা বেওয়ার দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা ব্যাতিরে তার কোন পুত্র সন্তান নেই। মেয়ে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে বাড়িতে একা থাকবে বিধায় সেখানে তার বাড়ির কয়েকটি রুম ভাড়া দেয়। সেই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে প্রায় দীর্ঘ ৪০ বছর আগে থেকে থাকেন মেহেরপুর কুদালকাঠী এলাকার বাসিন্দা বর্তমানে উক্ত বাড়িতে বসবাসকারী হাবিবুর রহমান হাবিবের পিতা মৃত মওলা বক্সের পরিবার।দীর্ঘ দিন যাবত তারা এভাবেই একত্রে সখিনা বেওয়াকে ভাড়া দিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। এরই মাঝে জমির মুল মালিক সখিনা বেওয়া বয়সকালীন সময়ের কারনে অসুস্থ হয়ে পড়েন।দাম্পত্য জীবনে তার কোন পুত্র সন্তান না থাকার কারনে অসুস্থতার খবর পেয়ে তার একমাত্র কন্যা শাহানা বেগম এবং কন্যার মেয়ে তার নাতনী মমতাজ বেগম তাকে তাদের বাড়িতে চিকিৎসার জন্য তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সখিনা বেওয়াকে নিয়ে যাওয়ার পরে হাউজিং বি ব্লকের ৩৪৫ নং বাড়িটির সমস্ত দেখাশুনা করতে থাকে মৃত মওলা বক্স ও তার পরিবারের লোকজন এবং তারা নিয়মিত সখিনা বেওয়াকে ভাড়া দিতেন। কয়েকবছর অসুস্থতা জীবনে ভোগান্তি শেষ করে ১৯৮৩ সালে  সখিনা বেওয়া ইন্তেকাল করেন।সখিনা বেওয়া ইন্তেকালের পর থেকে সম্পতির ওয়ারিশ হয়ে যায় তার কন্যা শাহানা বেগম। ওয়ারিশ সুত্র ধরেই উক্ত বাড়ির ভাড়া নিতেন শাহানা বেগম এবং তিনিও ইন্তেকাল করেন। শাহানা বেগমেরও দাম্পত্য জীবনে কোন পুত্র সন্তান না থাকার কারনে ওয়ারিশ বনে যায় শাহানা বেগমের কন্যা ও সখিনা বেগমের নাতনী মমতাজ বেগম।এরই মাঝে হাউজিং বি ব্লকের ৩৪৫ নং বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া মওলা বক্স মারা যান। তারপর থেকে সেখানে বসবাস করতেন তার ৬ ছেলে। তারাও ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে  বাড়ির সম্পত্তির ওয়ারিশ মমতাজ বেগমকে নিয়মিত ভাড়া দিয়ে আসছিলেন। এভাবেই চলছিলো ভাড়াটিয়া এবং মালিকের সাথে সম্পর্ক।এক পর্যায়ে উক্ত বাড়িতে বসবাসকারী মৃত মওলা বক্সের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব সহ ৬ ছেলেরা উক্ত সম্পত্তি এবং বাড়ির মালিক তারা বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে জমির বর্তমান ওয়ারিশ মমতাজ বেগম বলেন,আমার নানির সম্পত্তির বাড়িতে মওলা বক্স সহ তার ছেলেরা ভাড়া ছিলেন।এখন তারা দাবি করছে উক্ত সম্পত্তি আমার নানি বিক্রয় করে দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে কাগজপাতি চেয়েছে তারা একটি দলিলের কাগজ দেখিয়েছে যেখানে উল্লেখ রয়েছে মওলা বক্সের ৬ ছেলের নামে আমার নানি সখিনা বেওয়া ভেড়ামাড়া রেজিস্ট্রি অফিস থেকে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। আসলে সেটা একটা ভুয়া দলিল। আমার নানি কারোও কাছে জমি বিক্রয় করেনাই। আর যদি বিক্রয় করতো আমাদেরকে জানাতো। আর হাউজিংয়ের জমি বিক্রয় করলে কতৃপক্ষের নিকট থেকে সেল পারমিশন নেওয়া লাগে সেটা তারা নেইনাই। তারা জালিয়াতি করে আমাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। এ বিষয়ে হাউজিং এস্ট্রেটের অফিসে যোগাযোগ করলে জানা যায় , হাউজিং এস্ট্রেটের যে কোন জায়গা নাম পরিবর্তন এবং বিক্রয়ের জন্য অফিসের সাথে যোগাযোগ করে সেল পারমিশন নেওয়া লাগে। এ ছাড়া হাউজিং এস্ট্রেটের সম্পত্তির রেজিস্ট্রি শুধু মাত্র কুষ্টিয়া সদর রেজিস্ট্রি অফিসেই হয় অন্যথায় রেজিস্ট্রি হলে তা বাতিল বলে ঘোষনা করা হয়। আর কেউ যদি এগুলো করে তাকে তা পুরোটাই অবৈধ। এ বিষয়ে বর্তমানে দখলে বসবাসকারী হাবিবুর রহমান হাবিবের সাথে কথা বললে তিনি বলেন,আমরা এই সম্পত্তি সখিনা বেওয়ার নিকট থেকে ক্রয় করেছি এবং ভেড়ামাড়া রেজিস্ট্রি অফিস থেকে রেজিস্ট্রি করেছি আমাদের কাগজ আছে সেল পারমিশন আছে। প্রতিবেদক সেল পারমিশনের কাগজ দেখতে চাইলে হাবিব তা দেখাতে পারেনি। এ ছাড়াও হাউজিং অফিসে খোজ নিয়ে জানা যায়, হাউজিং এস্ট্রেটের অফিসের মুল দলিলের খাতায় এখনো পর্যন্ত সখিনা বেওয়ার নামেই সম্পত্তি রয়েছে এবং কয়েকমাস আগে হাউজিং অফিস থেকে সখিনা বেগমের ওয়ারিশ মমতাজ বেগমের নিকট সখিনা বেগমের মৃত্যু সনদ এবং ওয়ারিশ সার্টিফিকেট চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছিলো।হাউজিং এস্ট্রেটের বি ৩৪৫ নং জমিটি ১৯৮৩ সালে সখিনা বেওয়ার নামে রেজিস্ট্রি হলেও দখলদার হাবিবুর রহমান সহ তার ৬ ভাইয়েরা যে দলিল দেখিয়েছে সেখানে ১৯৮২ সালের জুন এবং মে মাসে দুইটি  দলিলে সখিনা বেওয়া প্রথমে মওলা বক্স ও পরে মওলা বক্সের  ৬ ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে।এখানে এখন দুটি প্রশ্ন মুখোমুখি হয়েছে যে মুল মালিকের নামে রেজিস্ট্রি হয়েছে ১৯৮৩ সালে কিন্তু দখলদার দাবি করছে মুল মালিক সখিনা বেওয়া লিখে দিয়েছে ১৯৮২ সালে। এখানেই জমি দলিল জাল করা হয়েছে তার প্রমান পাওয়া যায়। ভুক্তভোগীর দাবি যথাযথ কতৃপক্ষ উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে তদন্তুপূর্বক জমি জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন। 

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply