মহম্মদপুর উপজেলা প্রতিনিধি:
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ধোয়াইল গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাইকে ফাঁসাতে কেয়ারটেকারের স্ত্রীকে দিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা সাজিয়েছে দুই ভাই। বিষয়টি এলাকায় সমালোচিত হলে ওই স্ত্রীর স্বামী সাংবাদিকদের কাছে সব জানান। এছাড়া মামলার সব স্বাক্ষীও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
ওই কেয়ারটেকার জানান, ধোয়াইল গ্রামের মৃত আবদুল বারিক মোল্যার ছেলে আরিফ রেজার সাথে অন্য দুই ভাই আবুল কালাম সামছুদ্দিন ও হানিফুজ্জামানের জমি জমা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল। আবুল কালাম সামছুদ্দিন ও হানিফুজ্জামান স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকা এবং মাগুরাতে থাকেন। তাদের দুই ভাইয়ের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দীর্ঘ দিন যাবৎ দেখাশুনা করি। আমার স্ত্রীও ওই বাড়ি দেখাশুনা করে।
সামছুদ্দিন ও হানিফ আমাদের দিয়ে ফাঁসানোর জন্য আরিফের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেছে। এ মামলায় আমাকে স্বাক্ষীও করা হয়েছে।
এদিকে মামলার অন্য স্বাক্ষী মৃত কুদ্দুস মোল্যার ছেলে বাবু, আবু বক্কারের ছেলে সেলিম ও আমিন ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
তারা জানান, কিছুদিন আগে ডিবি পুলিশ এসেছিল তখন আমরা জানতে পারি আমাদের স্বাক্ষী করা হয়েছে। আসলে ঘটনাটি সত্য নয় সাজানো, মিথ্যা একটি ঘটনা।
জানা যায়, ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে ওই কেয়ারটেকারের স্ত্রী মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত ১৯ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ওই নারী জানান, আমি বিভিন্ন বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করি। তিন বছর আগে আরিফ রেজা দম্পতির বাড়িতে কাজ করতাম। আরিফ রেজার লোলুপ দৃষ্টি আমার ওপর পড়লে এবং কুপ্রস্তাব দিলে আমি প্রত্যাখান করে মান-সম্মানের ভয়ে কাজ ছেড়ে দেই। পরে তার বাড়ির সাথে লাগোয়া আবুল কালাম সামছুদ্দিন ও হানিফুজ্জামান দুই ভাইয়ের বাড়িতে আমার স্বামী কেয়ারটেকারের কাজ করে। আমিও তার সাথে বাড়ির দেখাশোনা করি।
গত ১৪ অক্টোবর বিকেলে আমাকে একাকি পেয়ে আরিফ রেজা পিছন থেকে এসে ঝাপটে ধরেন এবং মুখ চেপে ধরেন। পরে আবুল কালাম সামছুদ্দিনের রান্না ঘরের মধ্যে নিয়ে জোর করে মাটিতে শোয়ায় এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আরিফের ডান হাতে কাঁমড় দিলে ছেড়ে দেন। আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, কান্নাকাটি করলে, কাউকে কিছু বললে, তোর মুখ এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেবো এবং তোর স্বামীকেও মেরে ফেলবো।
পরে আমার স্বামী ও ১ নম্বর স্বাক্ষীকে দেখতে পেয়ে তিনি দ্রুতগতিতে পালিয়ে যান। তার স্ত্রীও এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন। আমি ঘটনাটি স্বামীকে জানাই। আসামিরা আমার স্বামীকেও খুন জখমের হুমকি দিতে থাকে। মহম্মদপুর থানায় মামলা করতে গেলে তারা মামলা নেয়নি।
এ ব্যাপারে মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস জানান, এরকম কোনো বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি। এলে আমরা মামলা নিতাম।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক ফকির জানান, আরিফ রেজা একজন ভালো লোক। তিনি এধরনের ঘটনা ঘটাতে পারেন না।