অনলাইন ডেস্ক:
জাতীয় সংসদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা বলেছেন, ব্যক্তির মৃত্যু হয়, চেতনার মৃত্যু হয় না। বঙ্গবন্ধু আমাদের চেতনা, আমাদের আদর্শ। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে এই আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, এলজিআরডি মন্ত্রী এম তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, হুইপ শাসমুল হক চৌধুরী, সরকারি দলের ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, নজরুল ইসলাম বাবু, মেহের আফরোজ চুমকি ও নাহিদ ইজাহার খান এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও ডা. রুস্তম আলী ফরাজী প্রমুখ।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহামানব, সারা বিশ্বের দুঃখী মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর হূদয় ছিল সমুদ্রসম। মৃত্যুর মুখোমুখি হলে মানুষ বাঁচার চেষ্টা করে। কিন্তু ১৫ আগস্ট বঙ্গমাতা সিঁড়ির ওপর বঙ্গবন্ধুর লাশ দেখে খুনিদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাননি বরং বলেছিলেন আমাকে এখানেই মেরে ফেল, আমি কোথাও যাব না। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মরণেও একসঙ্গে ছিলেন বঙ্গমাতা। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপই শিক্ষণীয়। আইনের শাসনের প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধাশীল ছিলেন বলেই সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধু নিশ্চিত করেননি, মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন। তাই আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু তাঁর সম্মোহনী শক্তি দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা জাতিকে জাগিয়ে তুলে আমাদের এনে দিয়েছেন রক্তিম স্বাধীন পতাকা ও স্বাধীনতা। মানুষের অধিকার ও মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর কারাগারে নির্যাতন ভোগ করেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউনেসকোভুক্ত সব দেশ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছে।
শেখ ফজুলল করিম সেলিম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলেও তাঁর আদর্শ ও কর্মের কখনো মৃত্যু হবে না। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ইতিহাস বিকৃত ও বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা করে খুনিরা ব্যর্থ হয়েছে। ইতিহাসকে কেউ চাপা দিয়ে রাখতে পারে না, ইতিহাস তার নিজস্ব গতিতে চলে। সেটাই প্রমাণিত হয়েছে।
শেখ সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু আমাদের আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন বঙ্গবন্ধু বাংলার আকাশ বাতাস পানি মানুষ ও বাঙালির মণিকোঠায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের চেয়ে ভালো ভাষণ বিশ্বের কোনো নেতাই দিতে পারেননি।