অনলাইন ডেস্ক:
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, যে আশা নিয়ে নূর হোসেন আত্মদান করেছিলেন তা পূরণ হয়নি। আজ মঙ্গলবার (১০/১১/২০২০) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে ‘গণতন্ত্র দিবস’ পালন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জি এম কাদের বলেন, “নূর হোসেন হয়তো চেয়েছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলের গণতন্ত্রের চেয়ে আরও ভালো গণতন্ত্র পাবে দেশ। এই আশায় বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরতন্ত্র নিপাক যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখেছিলেন তিনি। কিন্তু গণতন্ত্র কি মুক্তি পেয়েছে?”
তিনি আরও বলেন, ‘তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করেন। কিন্তু ’৯১ সালের নির্বাচনের পর তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংসদীয় পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। সংবিধানের ৭০ ধারা সংসদীয় পদ্ধতির মূল স্বাদ নষ্ট করেছে। ৭০ ধারা অনুযায়ী সরকারদলীয় সদস্যরা সরকারি দলের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যে দল সরকার গঠন করে, সেই দলের প্রধানই সংসদীয় দলের নেতা এবং সরকার প্রধান হন। সরকার প্রধান যে সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই বাস্তবায়ন হয়।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের তন্ত্র। এতে জনগণের শাসন নিশ্চিত হয়। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভুল করে না। বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভুল মানুষকে নির্বাচিত করেনি। প্রকৃত গণতন্ত্র নিশ্চিত হলে রাষ্ট্রের সব স্তরে জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত হলে দেশে সুশাসন নিশ্চিত হবে যাতে সামাজিক ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। প্রতিবছর গণতন্ত্র দিবসে এই হবে আমাদের অঙ্গীকার।’
উল্লেখ্য, আজ ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস। বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৮৭ সালের এই দিনে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা স্লোগান নিয়ে মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন নূর হোসেন। মিছিলটি রাজধানীর জিরো পয়েন্ট (বর্তমান শহীদ নূর হোসেন চত্বর) এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নূর হোসেন শহীদ হন।
আজকের দিনটিকে ‘গণতন্ত্র দিবস’ হিসেবে পালন করেছে জাতীয় পার্টি।