Sunday , 24 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
এসআই আকবর কে পালাতে সহযোগিতা করেছে হাসান
--প্রেরিত ছবি-28.10.20

এসআই আকবর কে পালাতে সহযোগিতা করেছে হাসান

সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তা করেন একই ফাঁড়ির টু-আইসি হাসান। এছাড়া সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) একাধিক কর্মকর্তার গাফিলতিও এজন্য দায়ী বলে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটি। আর এ ঘটনায় এসএমপির শীর্ষ পর্যায় থেকে মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা পর্যন্ত অনেকেই দায় এড়াতে পারবেন না। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

মঙ্গলবার আইজিপি ড. বেনজির আহমেদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির প্রধান এআইজি (ক্রাইম অ্যানালাইসিস) মো. আয়ুব।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (গণমাধ্যম) সোহেল রানা প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিবেদনে কী আছে ঠিক এই মুহূর্তে বলতে পারব না। তবে তদন্ত কমিটির মতানুযায়ী কারও দায় থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে গত ১২ অক্টোবর বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকেই সে পলাতক। এ ঘটনায় ৬ পুলিশ সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিলেও আকবরকে নেয়া হয়নি। কেন তাকে নেয়া হয়নি, কে তাকে পালানোর সুযোগ দিয়েছে তা চিহ্নিত করতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দফতর।

হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (ক্রাইম অ্যানালাইসিস) মোহাম্মদ আয়ুবকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্যরা ছিলেন- সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম, এসএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. মুনাদির ইসলাম চৌধুরী।

সূত্র জানায়, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আকবরকে পালাতে সরাসরি সহায়তা করেছেন বন্দর বাজার ফাঁড়ির টু-আইসি এসআই হাসান।

১২ অক্টোবর বিকাল ৪টার দিকে কোনো এক গোয়েন্দা সংস্থা থেকে এসএমপির সিটি এসবির এক সদস্যের কাছে জানতে চায় আকবরকে কখন গ্রেফতার করে রিজার্ভ অফিসে আনা হবে। এটা শোনার পরই সেই সদস্য ফোন করে এসআই হাসানকে। হাসান সেই তথ্য আকবরকে সরবরাহ করে। ৩টা ৫৬ মিনিটে বন্দর ফাঁড়িতে হাসানের কাছে অস্ত্র, ওয়্যারলেস সেট ও মোবাইল সিম হস্তান্তর করে আকবর বেরিয়ে যায়।

কিন্তু হাসান বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তাদের জানান সন্ধ্যা ৬টার দিকে। এছাড়া এসআই হাসান যে বন্দর ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পাল্টানোর সঙ্গে জড়িত ছিল তা এসএমপির তদন্ত প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে।

তবে পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটি সিলেটে যাওয়ার আগে তার বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ বিষয়টিকেও তদন্তে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে বলে পুলিশ সদর দফতরের সূত্রটি জানায়।

পুলিশ সদর দফতরের সূত্রটি জানায়, এর আগে তদন্তেও প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত এসআই আকবর নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত। এরপরও কেন তাকে পুলিশ লাইনে হেফাজতে নেয়া হয়নি এ বিষয়টি তদন্তের মূল ইস্যু ছিল।

তাকে বরখাস্তের নির্দেশনার সঙ্গে কেন হেফাজতে নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়নি। পালিয়ে যাওয়ার আগে আকবর বন্দরবাজার ফাঁড়িতেই ছিল। কেন তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়নি।

এসব সিদ্ধান্ত নিতে যারা গড়িমসি করেছেন তাদেরকেই দায়ী করা হয়েছে। এছাড়া মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বাতেন কেন আকবরকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক রাখেননি সে বিষয়েও প্রশ্ন আছে।

৫ নভেম্বরের মধ্যে আকবরকে গ্রেফতার না করলে কঠোর কর্মসূচি : ৫ নভেম্বরের মধ্যে রায়হান হত্যার মূল আসামি এসআই আকবরকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন সিলেট জেলা ও মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের নেতারা। অন্যথায় সিলেটবাসীসহ সারা দেশের মানুষকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় লজ্জিত এসএমপি কমিশনার : মো. রায়হান আহমদকে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনাটিকে ‘অপ্রত্যাশিত’ ও ‘অনভিপ্রেত’ উল্লেখ করে নবাগত পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন- এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা জড়িত থাকায় আমি লজ্জিত।

এর মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে বরখাস্ত এসআই আকবরের পালিয়ে যাওয়া আরও লজ্জার। আকবরকে ধরতে বাহিনীর অনেকগুলো ফোর্স কাজ করছে। তাকে ধরিয়ে দিতে জনগণও সহায়তা করতে পারেন।

জনসাধারণের মধ্যে যদি কেউ আকবরের অবস্থান শনাক্ত করতে পারেন বা ধরতে পারেন, তাহলে দ্রুত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়েই আমি সিলেটে এসেছি।

মঙ্গলবার রাতে নগরীর আখালিয়ায় পুলিশের নির্যাতনে নিহত রায়হানের বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটি বলেন সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) নতুন কমিশনার।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply