কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :ইটভাটা ব্যবসায়ী মিরাজ খুন ও অস্ত্রসহ ডজন খানেক বিচারাধীন মামলা থেকে বাঁচতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের চরমপন্থীদের অভয়ারন্য বলে খ্যাত লাহিনীপাড়ার সেই চরমপন্থী নেতা আলতাব বাহিনীর প্রধান আলতাবসহ তার সঙ্গীরা। সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান আলতাব হোসেন ওরফে আলতাব প্রফেসর (৫৫), ডিএসবির তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী শাহাজাহান ও চরমপন্থী দলের সক্রিয় সদস্য কহিনুরসহ তাদের সহযোগিদের নামে কুষ্টিয়াসহ পাশ্ববর্তী জেলায় সন্ত্রাস, ডাকাতি, অস্ত্রকারবারী ও খুনসহ ডজন খানেক মামলা রয়েছে। সেগুলোর অধিকাংশই আদালতে বিচারাধীন ও কিছু মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এদিকে আলতাব বাহিনী তার নিজ এলাকার কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের লাহিনীপাড়ায় পুলিশের চেকপোষ্টের ডিউটিরত অবস্থায় পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ আটক হয়। সেই মামলার বিচার প্রায় শেষের দিকে। রায় যে কোন দিন। সেই মামলা থেকে বাঁচতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে দৌড়-ঝাপ শুরু করেছে বলে সুত্রটি জানায়। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৫ই আগষ্ঠ কুমারখালী পুলিশের একটি দল মহাসড়কের নিরাপত্তার জন্য কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের লাহিনীপাড়ায় অস্থায়ী চেকপোষ্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ মালামাল ধরতে তল্লাশী চালায়। এ সময় কুষ্টিয়ার দিকে আসা দ্রুতগামী একটি মোটরসাইকেল থামালে আলতাব পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় কিন্তু তার সহযোগি কহিনুর ও শাহাজাহান পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সে সময় চরমপন্থী নেতা আলতাবের দেহ তলাশী করে সক্রিয় একটি লোহার তৈরি ওয়ান সুটারগান উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কুমারখালী থানার চৌকস পুলিশ অফিসার এসআই মমিনুর রহমান বাদী হয়ে ১৮৭৮ অস্ত্র আইনে ১৯-এ ধারায় মামলা করেন। মামলা নং ৫, তারিখ-০৬/০৮/২০১৫ ইং। মামলাটি এসআই জালাল তদন্ত করেন। চরমপন্থী নেতা আলতাব, শাহাজাহান ও কহিনুরের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভাবে সত্যতা প্রমান পাওয়াই আদালতে একই বছরের ৩০ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন। সেশন-১১৩/১৫। সুত্রটি জানায়, অস্ত্র মামলায় নিশ্চিত জেল-জরিমানা হবে ভেবে বিভিন্ন দপ্তরে সে তদবীর শুরু করে দিয়েছে। যে কোন মূল্যে এ মামলা থেকে বাচতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আলতাব বাহিনীর প্রধান আলতাব। সুত্রটি জানায়, চরমপন্থী নেতা আলতাবের বিরুদ্ধে কুমারখালী জিআর ১৪৬/১৪, কুমারখালী থানার মামলা নং ২(৬)২০১৫ ধারা ৩৬৪, ৩০২, ২০১, ৩৪ পেনাল কোড, একই থানায় মামলা নং ৫, তারিখ ৬/৮/১৫ইং ধারা-১৯এ অস্ত্র আইনে, রাজবাড়ী সিআর ৪৪৬/১৪, ধারা ৪০৬ পেনাল কোড, একই থানায় মামলা ৯(৯)০৬ ধারা ৩০২,৩৪, কুষ্টিয়া সদর থানায় মামলা নং ৩৮(২)০৬ ধারা ৩৬৩, ৩০২, ৩৪ পেনাল কোড, কুমারখালী থানায় মামলা নং ১৪(১২)১৪ ধারা ৪৪৭, ৩৭৯ পেনাল কোড, একই থানায় মামলা নং ৬(২)১১ ধারা ১৪৩, ৪৪৭, ৩৪১, ৩৪২, ৩৭৯, ১১৪, ৫০৬, কুমারখালী থানায় জিআর মামলা নং ১৪২/৯৭, জিআর ১৩/৯৮, জিআর ১২/৯৯ ও সেশন ৬৩/৯২ মামলা গুলো বিচারধীন রয়েছে। এছাড়াও আলতাবের সেকেন্ড ইন কমান্ড জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী শাহাজাহানের বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় মামলা নং ১৩(৪)১৯৯১ ধারা ৩০২, ৩৪, একই থানায় মামলা নং ১৬(৫)৯৮ ধারা ৩০২, একই মামলা নং১(৮)৯৮ ধারা ৩২৪, ৩০২, ৩৪, মামলা নং১০(৮)৯৮ ধারা ৩২৩, ৩০২, ৩৪, মামলা নং১০(৮)৯৮ ধারা ৩২৪, ৩২৩, ৩০৭ ও ১১৪, মামলা নং ০৯(৯)২০০৬, ধারা ৩০২, ৩৪, মামলা নং ০২(৬)২০১৫ ধারা ৩৬৪, ৩০২, ২০১, ৩৪, মামলা নং ০৫(৮)১৫ ধারা অস্ত্র আইনে ১৯এ, কুমারখালী জিআর ১৪৬/১৪, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার মামলা নং ০৪, তারিখ ২৬/৮/১৫ ধারা ১৯এ অস্ত্র আইনে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অসংখ্য জিডি ও অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। চরমপন্থী নেতা আলতাব ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে আনিত অস্ত্র মামলায় দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।