বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ইয়ামিন হোসেন, পরে জাপানের কগোশিমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করার সময় থেকে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সমৃদ্ধ করা এবং দেশের বাওরগুলোতে পুরোনো দেশি মাছ ফিরিয়ে আনা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।দেশীয় মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ যুগ পরিশ্রমের সফলতা হাতে পেয়েছেন তিনি । বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষকদের মধ্যে তাঁর অবস্থান এখন প্রথম। সম্প্রতি স্কোপাসের করা জরিপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছেন অধ্যাপক ড. ইয়ামিন হোসেন। রাবির ফিশারিজ বিভাগের গুণী এ গবেষকের ৮৬টি নিবন্ধ প্রকাশ পেয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গবেষণা পত্রিকায়। শুধু তাই নয়, সেরা ৫০ জন গবেষকের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ড. ইয়ামিন হোসেনের নাম। বর্তমানে চারটি প্রকল্প তত্ত্বাবধায়ন করছেন তিনি। দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছেন অধ্যাপক ইয়ামিন হোসেন। তাঁর গবেষণা এখন নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের উন্নত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, নেপাল, পাকিস্তান ও ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চলছে। সফলতা পেতে হলে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয় অধ্যাপক ড.ইয়ামিন হোসেন তার জ্বলন্ত প্রমাণ। বর্তমানে সামুদ্রিক বিভিন্ন মাছ, ঝিনুক ও দেশীয় মাছ, শামুক নিয়ে কয়েকটি প্রজেক্টে গবেষণা করছেন তিনি এবং তাঁর সহযোগী গবেষক দল । বঙ্গোপসাগরে মাছ ধারার নিষিদ্ধ সময় এর পুনর্বিবেচনা এবং সংস্কার এর বিষয়েও গবেষণার কাজ করছেন তিনি । এছাড়াও সমুদ্রের সব মাছের ক্যাটালগ তৈরীর চেষ্টার কয়েকটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন ড.ইয়ামিন হোসেন ও তাঁর দল । দেশীয় মাছ ও শামুক সংরক্ষণের একটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা । তাঁর আরও একটি উল্লেখযোগ্য কাজ হলো ‘The Hilsha Strengthening Project’ যা ইলিশের সারাবছর ডিম দেয়া এবং প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার মতো বিষয়ের উপর ভিত্তি করে করা । রাবির ফিশারিজ বিভাগে রাত্রিকালীন গবেষণার সুযোগ না থাকায় নিজ বাসায় স্থাপন করেছেন গবেষণাগার। ২৮ জন শিক্ষানবিশ গবেষক তাঁর অধীনে গবেষণা করছেন। তাঁদের জন্যও তিনি দিয়েছেন সুযোগ সুবিধা। রাতে গবেষণা করে শিক্ষার্থীদের মেস বাসা বা হলে ফিরতে সমস্যা হলে তাদের জন্য খুলে দিয়েছে গেস্ট রুমের দ্বার। গবেষণার ও সফলতার কৃতিত্ব সবটুকু তাঁর প্রিয় শিক্ষার্থীদের দিয়েছেন অধ্যাপক ড. ইয়ামিন হোসেন। তিনি বাংলাদেশ ফিরারিজ গবেষণা ফোরাম থেকে ‘সেরা গবেষণা উপস্থাপনা পুরষ্কার ২০১৬’ মনোনীত ও দি ওয়াল্ড একাডেমি অব সায়েন্স থেকে ‘তরুণ বিজ্ঞানী পুরস্কার ২০১৫’ সহ বিভিন্ন পুরুষ্কার ও সম্মান অর্জন করেন ।
লেখক: আবু সাহাদাৎ বাঁধন
ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যাল।