কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: বাংলা সনের ১লা কার্তিক (১৭ অক্টোবর) বাউল সাধক ফকির লালন শাহ্ এর ১৩০ তম তিরোধান দিবস। প্রতি বছর এইদিনে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার লালন মাজার প্রাঙ্গনে বাউল, সাধক ও লালন ভক্ত অনুসারীদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। পাশাপাশি কালি নদীর তীরে আয়োজন করা হয় লালন মেলার। কিন্তু বিশ্বব্যাপি করোনা মহামারীর কারোনে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্ এঁর ১৩০ তম তিরোধান দিবসের সকল অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে বলে জানিয়েছেন লালন অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন। তবে সাধুদের অভিযোগ তাদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধুদের দাবি শুধুমাত্র আঁচলাধারী বাউল সাধকদের জন্য খুলে দেওয়া হোক আঁখড়া বাড়ি যাতে তারা তিরোধান দিবসের নিয়মরীতি গুলো পালন করতে পারে।লালন শাহের মৃত্যুর পর থেকেই কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালন আঁখড়াবাড়িতে ২টি অনুষ্ঠানে সাধু ভক্ত এবং অনুসারিদের সমাগম ঘটে। এর একটি ১লা কার্ত্তিক অনুষ্ঠিত হয়। মারমী দার্শনিক লালন শাহের তিরোধান দিবস আর অপরটি ফাল্গুন মাসের দোল পূর্নিমার দিন দোলউৎসব। এই অনুষ্ঠান দুটি ঘিরে আঁখড়াবাড়িতে আয়োজন করা হয় সাধুসঙ্গ। কোন সাধক ফকিরকে আমন্ত্রন জানানোর প্রয়োজন হয়না অনুষ্ঠানের জন্য। উৎসব দুটির কয়েকদিন আগেই দেশ বিদেশ থেকে সাধু ভক্তরা চলে আসেন উৎসব অঙ্গনে, এবারও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। করোনার অজুহাতে এবারের বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্ এর ১৩০ তম তিরোধান দিবসের সকল অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। করোনা মহামারীতে বিদেশী ভক্তদের আগমন না ঘটলেও ইতিমধ্যেই লালন ভক্তরা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে মাজারের আশেপাশে সহ রাস্তার পাশে অবস্থান নিয়েছে। তবে মাজারের মূলগেট এবং মাঠের গেট বন্ধ থাকাতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধু, ভক্ত, লালন অনুসারী সহ সারাদেশ থেকে ঘুড়তে আসা দর্শনার্থীরা।মারমী দার্শনিক লালন শাহের তিরোধান দিবসে আসা ভক্তরা বলছে, আঁখড়াবাড়ী এবং সংলগ্ন মাঠ আনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। দূরদুরান্ত থেকে আগত সাধু ভক্তগন আঁখড়া বাড়িতে না ঢুকতে পেরে গেট থেকেই সাঁইজিকে ভক্তি জানিয়ে ফিরে যাচ্ছেন অশ্রুসিক্ত নয়নে। একটু বসার জায়গাও মিলছেনা তাঁদের। এসময় জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন লালন ভক্তরা বলেন, শুধুমাত্র আঁচলাধারী বাউল সাধকদের জন্য অন্ততো আঁখড়া বাড়ি খুলে দেওয়া হোক।