কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : প্রতিষ্ঠার ৪২ বছরে পদার্পণ করেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামী শিক্ষার অন্যান্য শিক্ষণ-শাখাসমূহ এবং তুলনামূলক আইনবিজ্ঞান ও অনুরূপ শাখাসমূহে শিক্ষা-চর্চার উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে পথচলা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তে শান্তিডাঙা-দুলালপুরে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি।প্রতিষ্ঠার ৪১ বছর পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্জনের ঝুড়িটি হয়েছে অনেক ভারী। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে দু’টি অনুষদের চারটি বিভাগে ৩০০ ছাত্র ভর্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় অ্যাকাডেমিক যাত্রা। বর্তমানে ৮টি অনুষদের ৩৪টি বিভাগে ১৫ হাজার ৩৮৪ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নসহ প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট দূরীকরণে হলসংখ্যা আটটিতে উন্নীত করা হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটি ছাত্রদের এবং তিনটি ছাত্রীদের। ৫৩৭ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্পের আওতায় ক্যাম্পাসে ৯টি ১০তলা ভবন ও একটি কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান গবেষণাগার নির্মাণ, ১২টি ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ এগিয়ে চলছে। কিন্তু ইসলামী শিক্ষা-চর্চার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার লক্ষ্য থেকে পুরোপুরি বিক্ষিপ্ত বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ইসলামী জ্ঞান ও আধুনিক জ্ঞানের সমন্বয় সাধনের কথা থাকলেও বর্তমানে তা অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আধুনিক জ্ঞানের পাশাপাশি ইসলামী জ্ঞানের সমন্বয়ের জন্য প্রত্যেক বিভাগে ইসলাম শিক্ষার ২০০ মার্কের কোর্স ছিল। বর্তমানে তা উঠিয়ে দিয়ে সেখানে ১০০ মার্কের নন ক্রেডিট কোর্স রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদে বিভাগ বৃদ্ধি হলেও ধর্মতত্ত্ব অনুষদে কোনো বিভাগ বৃদ্ধি হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. ইকবাল হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামোগতভাবে উন্নত হয়েছে। কিন্তু যে কনসেপ্ট নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ইসলামী শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে একে সেকুলার বিশ্ববিদ্যালয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম বলেন, যুগের চাহিদানুযায়ী এখানের প্রতিটি বিভাগকে গবেষণা ও উদ্ভাবনের দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলাই আমার প্রধান লক্ষ্য। বাংলাদেশের প্রথম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর ঐতিহ্য শুধু সমুন্নত রাখাই নয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে।