ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুকিতকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তিনি ২৭ অক্টোবর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০০ বোমা বানিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাপ্লাই দিয়েছেন বলে দাবি করেছে ডিবি। গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, মুকিত বোমা বিশেষজ্ঞ হওয়ায় তাকে ‘বোমা মাওলানা’ হিসেবে ডাকা হয়। তিনি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে ককটেল হামলার মূল পরিকল্পনাকারী।
গতকাল সোমবার পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে মুকিতকে গ্রেপ্তার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু তাকে (মুকিত) বোমা বানাতে গান পাউডার সাপ্লাই দেন জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পাঠানো ১০ কেজি গান পাউডার ভাটারা থানা যুবদলের আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম নয়নের কাছ থেকে নেন মুকিত। এই গান পাউডার দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফায় ৪০০ হাত বোমা তৈরি করে সে।
পরে এসব বোমা সাপ্লাই দেওয়া হয় বিভিন্ন থানা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের কাছে।’
নাশকতা কিংবা আগুন দেওয়ার যে কোনো ছবি লন্ডনে পাঠানো হলে তাদের পুরস্কৃত করা হতো জানিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, ‘প্রতিটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য অগ্নিসংযোগকারীকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে।’
মুকিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বোমা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী দাবি করে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘মুকিতের সরবরাহ করা হাত বোমা থেকে একটি বোমা যুবদলের সদস্য সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা মহানগর জজ কোট আদালতের প্রাঙ্গণে বিস্ফোরিত করে ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তাঁর স্ত্রী হাফসা আক্তার।
মুকিতের পরিচয় জানিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, তার নাম মুকিত, তবে সবাই তাকে ডাকে ‘বোমা মাওলানা’ নামে। এক সময় সে আলিয়া মাদরাসা ছাত্রদলের সহসভাপতি ও সভাপতি ছিল। পরবর্তী সময়ে ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তার ডান হাতের কবজি উড়ে যায়। এরপর থেকে তার নাম হয় ‘বোমা মাওলানা’।
দলীয় আনুগত্য, উগ্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করেন তারেক জিয়া।হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বোমা মাওলানা যুবদলের কর্মীদের শিখিয়ে দিত কীভাবে আগুন লাগাতে হবে। আর তাদের বলতো তার বলা কায়দায় যদি আগুন লাগানো হয় আর সেই ছবি যদি লন্ডনে পাঠানো হয় তাহলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’
টুকুকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হারুন বলেন, ‘তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’