অনলাইন ডেস্ক:
হেফাজতে ইসলামের ৩৩ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে আজ। নব গঠিত কমিটিতে রাখা হয়নি দলটির সাবেক কমিটির আলোচিত নেতা মামুনুল হক ও তার অনুসারীদের। ঘোষিত নতুন কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী।
সোমবার (৭ জুন) বেলা ১১টায় খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলে থাকা ও রাজনৈতিক পরিচয়ধারী নেতাদের বাদ দিয়েই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন সংগঠনের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে মো. ইউসুফ মাদানী। তাঁকে সহকারি মহাসচিব পদে রাখা হয়েছে।
নতুন কমিটিতে যারা আছেন-
আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। নায়েবে আমির পদে আছেন- মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, আব্দুল হক মোমেনশাহী, সালাহউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা মুহিবুল্লাহ গাছবাড়ী সিলেট, মাওলানা ইয়াহহিয়া হাটহাজারী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ফরিদাবাদ, মাওলানা তাজুল ইসলাম ও মুফতি জসিম উদ্দিন। মহাসচিব হাফেজ নুরুল ইসলাম জিহাদী। যুগ্ম-মহাসচিব পদ পেয়েছেন- মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা আব্দুল আউয়াল নারায়ণগঞ্জ, মাওলানা লোকমান হাকিম চট্টগ্রাম, মাওলানা আনোয়ারুল করীম যশোর ও মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী।
সহকারী মহাসচিব হয়েছেন- মাওলানা জহুরুল ইসলাম মাখজান, মাওলানা ইউসুফ মাদানী সাহেবজাদা আল্লামা শাহ আহমদ শফি। সাংগঠনিক সম্পাদক- মাওলানা মীর ইদ্রিস চট্টগ্রাম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী, সহ-অর্থসম্পাদক মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমী নাজিরহাট। প্রচার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী সাভার ও সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা জামাল উদ্দিন কুড়িগ্রাম।
দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী ও সহকারী দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক নোয়াখালী।
সদস্য মাওলানা মোবারক উল্লাহ বিবাড়ীয়া, মাওলানা ফয়জুল্লাহ পীর মাদানীনগর, মাওলানা ফোরকানুল্লাহ খলিল চট্টগ্রাম, মাওলানা মোস্তাক আহমদ খুলনা, মাওলানা রশিদ আহমদ কিশোরগঞ্জ, মাওলানা আনাস ভোলা, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী ও মাওলানা মাহমুদ আলম পঞ্চগড়।
কমিটি থেকে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক, নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, হাসান জামিল, মুফতি হারুন ইজহারসহ নানা ইস্যুতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া হেফাজত নেতারা বাদ পড়েছেন।
একইভাবে আল্লামা আহমদ শফীর হত্যা মামলার অভিযুক্ত নেতাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতে একক আধিপত্য বিস্তারকারী ‘রাবেতা’ ও ‘জমিয়ত’ সিন্ডিকেটও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির করে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট হেফাজতের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীসহ শফী অনুসারী কাউকে রাখা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে গত মার্চের ২৫, ২৬ ও ২৭ তারিখ দেশজুড়ে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, অন্তত ১৭ জন মানুষের প্রাণহানি হয়। এ সব নাশকতার পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত এক ডজন হেফাজত নেতা গ্রেফতার রয়েছেন।
নানা সমালোচনার মুখে গত ২৬ এপ্রিল মধ্যরাতে কমিটি বিলুপ্ত করেন জুনায়েদ বাবুনগরী। কয়েক ঘণ্টা পর নিজেকে আহ্বায়ক ও জিহাদীকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এর পর তাঁদের সঙ্গে সালাহ উদ্দিন নানুপুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরীকে যুক্ত করে কমিটির সদস্য সংখ্যা পাঁচ জন করা হয়। ওই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার ৪৩ দিনের মাথায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলো।