ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
গত ২৬-২৮ মার্চ সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস বিভাগের ২০ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী মনে করছেন হেফাজতে ইসলামের অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরে জড়িতে নেতাদের বাঁচানোর জন্য ২০ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। সরকার হেফাজতের তান্ডবকে কঠোর ভাবে ধমন করলে এই সহিংসতার পিছনে কারা জড়িত তা বের হয়ে আসবে।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাতে সাড়ে ১১টার দিকে মাদরাসার শিক্ষাসচিব মুফতি সামছুল হক সরাইলী স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কৃত ২০ শিক্ষার্থীই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কান্দিপাড়ায় অবস্থিত জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার (২০২০-২০২১) শিক্ষাবর্ষের দাওরায়ে হাদিস বা তাকমিলে হাসিদ বিভাগে পড়তেন। তাঁরা এ বছর বিদায়ী শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিল।
বহিষ্কৃত ছাত্ররা হলেন আশেক এলাহি, আবু হানিফ, মিছবাহ উদ্দিন, আশরাফুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, মবকুল হুসেন, রফিকুল ইসলাম, মুবারকুল্লাহ, বোরহান উদ্দিন, আবদুল্লাহ আবজাল, মো. জুবায়ের, হিজবুল্লাহ রাহমানী, জুবায়ের, শিব্বির আহমদ, ইফতেখার আদনান, সাইফুল ইসলাম, মো. সোলাইমান, রাকিব বিল্লাহ, তারেক জামিল ও মো. হাবিবুল্লাহ। তাঁদের সবার বয়স ২০ থেকে ২২ বছর হবে।
মাদরাসার শিক্ষাসচিব মুফতি সামছুল হক সরাইলী স্বাক্ষরিত এক আদেশ সূত্রে জানা গেছে, জামিয়ায় ইসলামীয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার ভর্তি পালনীয় শর্তাবলির ২৫ নম্বর ধারায় সুনির্দিষ্ট রীতিনীতি ও আইনকানুন অমান্য করে হুজুরদের বাঁধা উপেক্ষা করে গত ২৬ মার্চ বিকেলে জেলার সরকারি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়।
মাদরাসার নির্দেশ অমান্য করে এই ২০ শিক্ষার্থী সরাসরি সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলায় অংশ নিয়েছেন বলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে। এ তান্ডব ও সহিংসতা ছিল রাষ্ট্র বিরোধী ও ইসলামি বিদ্বেষমূলক। তাই তাঁদের মাদরাসা থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার মাদরাসার অধ্যক্ষ ও জেলা হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুবারক উল্লাহ’র সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মাদরাসার শিক্ষাসচিব সামছুল হক সরাইলীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় ওনার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষক আবদুল হক জানান, গত ২৬ মার্চ মাদরাসার শিক্ষকরা ওই ২০ শিক্ষার্থীকে মাদরাসায় রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাদরাসার শিক্ষকদের নিষেধ উপেক্ষা করেও মাদরাসা থেকে বের হয়ে যায় তারা। শিক্ষার্থীরা অহেতুক সরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলার প্রমাণ পাওয়ায় তাঁদের মাদরাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে গত সোমবার জেলা হেফাজতের সহকারী প্রচার সম্পাদক মুফতি জাকারিয়া খানকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৫৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সহিংসতার সাথে জড়িত আটককৃতরা অধিকাংশই হেফাজতের কর্মী।