Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করাই অন্যতম লক্ষ্য-প্রধানমন্ত্রী
--ফাইল ছবি

স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করাই অন্যতম লক্ষ্য-প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আগামী ৪ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ শান্তি সম্মেলন আয়োজন করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে লিখিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী, কার্যকর ও স্বাবলম্বী করাই বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী ৪ ও ৫ নভেম্বর দুই দিনব্যাপী শান্তি সম্মেলন আয়োজনে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও মানবিক কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের কথা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি আরো জানান, ওই সম্মেলনকে সফল করতে এরই মধ্যে ৪২ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতি এবং অটিজমবিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

একই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অংশগ্রহণের সঙ্গে একাধিক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীরা অংশ নিবেন। ‘বিশ্ব শান্তি ও মানবতা’-এর প্রবর্তক হিসেবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর কর্মকাণ্ড ও আদর্শের আলোচনার পাশাপাশি সম্মেলনে ‘ঢাকা শান্তি ঘোষণা’ গৃহীত হবে। সম্মেলনে ‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার’ দেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে তিনি জানান।

সরকারি দলের সদস্য আনোয়ার হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, গণতন্ত্র ও স্থানীয় সরকারের দাবি সব সময়ই পরস্পরকে গতিময় করেছে। গণতান্ত্রিক ধারণার ওপর ভিত্তি করে একটি স্থানীয় সংস্থার প্রতিনিধি জনগণের স্বার্থকে তুলে ধরতে পারে। বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে, সংবিধানের আলোকে সব অঞ্চলে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করা আবশ্যক।

প্রশ্নোত্তরে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে। কেননা গ্রামই সব উন্নয়নের মূল কেন্দ্র। গ্রামের উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যখন বেগবান হবে, তখন গোটা বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সম্মুখপানে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে দেশের প্রতিটি গ্রামে উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগব্যবস্থা, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্মত শিক্ষা, উন্নত পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের সম্প্রসারণের মাধ্যমে আধুনিক শহরের সব সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

একই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জানান, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী জনগণের ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদসহ পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা উন্নত ও প্রসারিত করতে সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তরকে (ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন) আরো শক্তিশালী ও স্বাবলম্বী করে অধিক কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিবিড় ভূমিকা পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনগুলো যুগোপযোগী করে সংশোধনের প্রস্তাব প্রণয়ন করেছে।

সংসদ নেতা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকারের অন্যতম প্রধান ও ভিত্তি স্তর। ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী ও স্বাবলম্বী করতে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, নারীর ক্ষমতায়নসহ মানুষের জীবনযাত্রার সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে জন-অংশগ্রহণ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য ১৮টি উপজেলা ও ২৫১টি ইউনিয়ন পরিষদে কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply