সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এ কে এম তাইফুল হক তৃতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নয় থেকে সাড়ে নয় মাসের ব্যবধানে তিনবারই উপসর্গসহ করোনা ধরা পরে এ চিকিৎসকের। সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত আইসোলেশন সেন্টারে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ডাক্তার এ কে এম তাইফুল হক। দায়িত্ব পালন এবং করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে। অল্প উপসর্গসহ প্রথম আক্রান্ত হন ২ মে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেই আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। নিজের সুস্থতা নিশ্চিত করেই আবারও লেগে পরেন রোগী সেবায়। দুই মাসের মাথায় ৭ আগস্টে করোনার আরেক ধাক্কা। উপসর্গ নিয়ে করোনা নমুনা পরীক্ষা। ফল আসে আবারও কোভিড পজেটিভ। ১৭ দিন পর দ্বিতীয়বারের মতো সুস্থ হন ডাক্তার তাইফুল হক। সর্বশেষ ১৫ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো করোনা পজিটিভ হয়েছেন এই চিকিৎসক। তার সহকর্মী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডাক্তার রতন কৃষ্ণ শাহা বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ প্রফেসরের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি। ডা.তাইফুল হকের উপুর্যপুরী তিনবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবার ৪০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার ফুসফুস। বর্তমানে নিজ বাসায় আইসোলেশন রয়েছেন। জানা যায়, ডাক্তার এ কে এম তাইফুল হক সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে কমপ্লেক্সের সহকর্মী এবং চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে পরিচিত। বৈশ্বিক মহামারী করোনার শুরুতেই সারাদেশ যখন স্থবির হয়ে পড়েছিল। তখন তিনি পরিবারের সকলকে ছেড়ে দিনরাত হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে গিয়েছেন। তার অনেক সহকর্মী বলেন কয়েক বার তিনি কোভিট পজিটিভ হবার পরেও চিকিৎসা সেবা থেকে রোগীদের বঞ্চিত করেননি ডাক্তার তাইফুল হক। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের চায়ের দোকানদার ইলিয়াস খান বলেন, ডাক্তার তাইফুল স্যার আমার দোকানের নিয়মিত কাস্টমার। আমার দেখা একজন ভালো মানুষ। করোনার সময় উনি রোগীদের জন্য যা করেছেন। তার মতো মানুষ হয় না। করোনাকালীন সময় দোকানপাট খাবার হোটেল বন্ধ ছিল। আমার বাড়ি হাসপাতালের পাশেই। রাতে হাসপাতালে থাকবেন এজন্য বাড়ি থেকে আমাকে ডেকে এনে দোকান থেকে চা বনরুটি নিয়ে খেয়ে রাত কাটিয়েছে।