সরকারি অনুদান প্রদানের জন্য স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গে চলচ্চিত্র বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সামনে প্রস্তাবিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনুদানপ্রাপ্তির জন্য আবেদনকৃত মোট ১৯৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত ৪৫টি চলচ্চিত্রের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
এ দিন পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা দেখে চলচ্চিত্রগুলোকে স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্যরা গোপনীয়ভাবে আলাদা আলাদা নম্বর প্রদান করেছেন। এ সময় চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্যরাও পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে। সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকার আরো পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে চায়।
স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ায় যাতে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়, সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যাতে অনুদানের জন্য বাছাইপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারেন, সরকার সেটিও নিশ্চিত করতে চায়।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বাছাই কমিটির সদস্যরা আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত বিভিন্ন মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে আবেদনকৃত চলচ্চিত্রের প্রস্তাবনার ওপর আলাদা আলাদা নম্বর প্রদান করছেন। পরবর্তী সময়ে সব সদস্যের নম্বরগুলো গড় করে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া আবেদনগুলো অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে।
সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার স্বার্থে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, যুগ্ম সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফফাত ফেরদৌস, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ ও আফসানা মিমি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ও পারফরম্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী চলচ্চিত্রের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চলচ্চিত্রশিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মানবীয় মূল্যবোধসম্পন্ন জীবনমুখী, রুচিশীল ও শিল্পমানসমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা-২০২০ (সংশোধিত)-এর ভিত্তিতে সরকারি অনুদান প্রদান করা হয়।
ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প আবার শুরুর ব্যাপারে আলোচনা
রাজধানীর ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প (বিআরপি)-এর কাজ দ্রুততার সঙ্গে আবার শুরু করার ব্যাপারে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ-এর সঙ্গে আলোচনা করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে ভূমিমন্ত্রীর দপ্তরকক্ষে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ভূমিমন্ত্রী বিআরপি প্রকল্পের কাজ আবার শুরু করার ব্যাপারে তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন এবং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
এদিকে গত ৬ এপ্রিল নিজ নির্বাচনী এলাকা ভাসানটেক পরিদর্শন করে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করা হবে না বলে জানিয়েছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। এ দিন বস্তিবাসীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের সময় আমি ভাসানটেক বিআরপি প্রকল্প নিয়ে আপনাদের কথা দিয়েছিলাম সব বস্তিবাসীকে পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভাসানটেক বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত বিআরপি প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।