কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
১৯২৮ সালে স্থাপিত হয় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার স্বনামধন্য ছাতিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রায় শতবর্ষী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। পূর্ববর্তী সময়ে স্কুলের ভবন ছিল রাস্তার সাথে। আর সেই সময়ে নিন্মমানের সেই ঘড়েই চলতো পাঠদান। বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে নিয়েছে নানা পদক্ষেপ। আর এরই অংশ হিসাবে ছাতিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়ে নতুন ভবন। আর নতুন ভবন করার ফলে পুরাতন ভবনটি দিনে দিনে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। দিনে দিনে রাস্তার পাশের স্থানটি ফাঁকা হয়ে যায়। অভিযোগ আছে পুরাতন ভবনটি রাস্তার পাশে হওয়াতে ওই জমির দিকে নজর আসে স্থানীয় প্রভাবশালী বগা বিশ্বাসের। সুপরিকল্পিত ভাবে নানা কৌশলে নতুন ভবনটি করা হয় মূল সড়ক থেকে দূরে। জানাগেছে স্কুলটির একই দাগে ৪০ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মধ্যে ৩৩ শতাংশ বিদ্যালয়ের আর ৭ শতাংশ স্থানীয় প্রভাবশালী বগা বিশ্বাসের। ৭ শতাংশ জায়গার মালিক বর্গা বিশ্বাস দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে বিদ্যালয়টির পূর্ব পাশে দখল করে ব্যবহার করে আসছিল । কিন্তু বর্তমান ৭ শতাংশ জমির মালিক বগা বিশ্বাস কৌশলে তার আগের দখল ৭ শতাংশ জমি ছেড়ে বিদ্যালয়ের সামনে দখলে নিয়েছে। যার ফলে সে বিদ্যালয়ের সামনে বহুতল মার্কেটের কাজ শুরু করেছে ইতিমধ্যে। এছাড়াও অভিযোগ আছে বিদ্যালয়টিও ম্যানেজিং কমিটি নানাজনে প্রশ্নবৃদ্ধ। বিদ্যালয়ের সামনের জায়গা ্এভাবে দখল করে নেওয়াতে প্রশ্ন উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধানশিক্ষকের সাথে সমস্ময় করেই বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করেছে। আর বিদ্যালয়ের সামনের স্থান দখল করাতে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। শতবর্ষী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পূর্বে যেখানে ছিল সেই স্থানেই মার্কেট নির্মাণ হলে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হবে। এছাড়াও বিদ্যালয়টি রাস্তা থেকে ঢাকা পড়ে যাবে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামনে বহুতল ভবন নির্মাণ হতে কোথাও দেখা যায়নি । এলাকার জনগণ কিছুতেই বুঝতে পারছে না যুগ যুগ আগে বিদ্যালয়ের পেছনের অংশে যেখানে একজন ব্যক্তির দখলে ছিল সে এখন কিভাবে সামনে জমির মালিক হয়। স্কুলের সামনে যদি মার্কেট নির্মাণ হয় তাহলে ছাতিয়ান প্রাইমারি স্কুলের সকল সৌন্দর্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে পূর্ববর্তী ম্যাপ রয়েছে তা লঙ্ঘন করা হবে।
এছাড়াও ছাতিয়ান ইউনিয়নে অবস্থিত ছাতিয়ান কালিতলা এলাকার সরকারি এস এ খতিয়েিনর প্রায় আট একর জমি দখল করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ আছে এসকল জমির অনেক অংশ ইতিমধ্যেই বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে প্রভাবশালী দখলদার চক্রটি। এছাড়াও ওয়াবদার এস এ রেকর্ড এর খাস জমি বিক্রি করেও বিপুল পরিমাণ অর্থ দখল করেছে প্রভাবশালী এ চক্রটি এ বিষয়ে সরকারি উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে জমিগুলো সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী। জানা গেছে এসকল জমি এর বর্তমান মূল্য প্রায় কোটি টাকার বেশি।
এস এ খতিয়ানের ৩৪০ নং দাগের ৬৭ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করার কথা উল্লেখ থাকলেও গুঞ্জন আছে সেই জমিও নাকি ছাতিয়ানের মহনপুরের মফি ও আমান গাইনের কাছে বিক্রি হয়েগেছে।
জনমনে প্রশ্ন অধিকাংশ জমি যেখানে এস এ খতিয়ানে সরকারী ভাবে একোয়ার করা সেখানে আর এস রেকর্ড কিভাবে ব্যাক্তি মালিকানাতে হয়।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, এসব জমির মালিক ছিলো হিন্দুরা । পরবর্তীরা তারা সব ফেলে দেশ ছেড়ে চলে যায়। যখন জমির কোন মালিকের হুদিস পাইনা তখন সরকার এসব জমি সরকারী ভাবে একোয়ার করে নেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এসকল জমি দখলে নেই বগা বিশ্বাস তার পরিবার সহ স্থানীয় কয়েকজন।
ছাতিয়ান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুজন জানান, হেডমাস্টারের থেকে জানেন ভালো হবে। সেসময় তিনি আরো জানান এটা নিয়ে আমার জীবন শ্যাষ হয়ে গেছে । এ নিয়ে বহুত দেনদরবার হয়েছে ইউএনও , ডিসি প্রর্যন্ত গড়াইছে । আমি এ নিয়ে আর কথা বলতে পারবো নানে।
বিদ্যালয়ের জমি দখল নিয়ে ছাতিয়ান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নানের সাথে ফোন করে কথা হলে তিনি জানান, আমাকে কেনো এসব প্রশ্ন করছেন । এটা সরকারি কাজ সরকারী ভাবে হয়েছে এই সিধান্ত নিয়েছে ম্যানেজিং কমিটি। আমরা ছোট চাকরি করি আমার কোন কিছু করাও ও ক্ষমতা নাই বাধা দেবারও ক্ষমতা নাই।
অভিযুক্ত বগা বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এটা এওয়াজের সম্পত্তি। নতুন ভবন হওয়াতে তারা জমি মেপে আমাাকে না জানিয়ে ফেলে রাখে স্কুলের সামনের ওই জাইগা। আর তাই আমি দখল করেছি। আর অন্য কিছু সম্পক্তি ভারতের বসবাস রত একজনের সাথে বিনিময় করে নিয়েছি। এখন এই সম্পত্তি সরকার নিয়ে নিলে বিনিময়ের সময় আমি যে সম্পত্তি দিয়েছি সেটা নিয়ে নিবো।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, স্কুলের সামনের জাইগা দখল করছে বগা বিশ্বাস এমন একটি অভিযোগ পাই এরপর কাগজ দেখে আপতত সঠিক মনে হয়েছে। তবে এর মধ্যেও যদি কোন ফাক ফোকর থেকে থাকে সেটা যাচাই করে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর অন্য কোন সরকারি জমি দখলের বিষয়ে এখনও কোন অভিযোগ পাইনি পেলে যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।