ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের ধনকুড়া গ্রামে প্রায়ই ৭শ হিন্দু লোকের বসবাস। এই গ্রামে ৩শ’র বেশী হিন্দু ভোটার আছে। তারা কৃষিকাজ, মাছ শিকার ও দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
হরিধন সরকার নামে এক ব্যক্তি ধনকুড়া গ্রামের একজন হিন্দু ভোটার। তার দুই মেয়ে স্মৃতি সরকার ও ইতি সরকার এবং এক ছেলে হৃদয় সরকার। অভাব-অনটন ও টাকার জন্য কোন সন্তানকে লেখাপড়া করাতে পারেনি হরিধন। হৃদয় একটি সেলুনে কাজ করলেও তার দুই মেয়েকে নিয়ে চলছে অভাবের সংসার। তার মধ্যে তারা আবার এলাকায় সংখ্যালঘু।
ধনকুড়া গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার মাদকসেবি ও লম্পট ফুরুক মিয়া হিন্দুপাড়া এলাকার হতদরিদ্র হরিধনের পরিবারের উপর চালাচ্ছে নির্বিক অত্যাচার ও নির্যাতন। হরিধনের দুই মেয়েকে ফুরুক একধিকবার ধর্ষণের চেষ্টার করেন।
অভিযোগ করা হচ্ছে, এলাকার মাদকসেবি ও লম্পট ফুরুক মিয়া (৪৫) হরিধনের বাড়িতে গিয়ে তার দুই মেয়েকে ( ২২ ও ১৭ বছর) ধর্ষণের চেষ্টা করে। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটলেও সন্ধ্যার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। রাতেই স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংশার চেষ্টা চলে। কিন্তু ফরুক এসব বিষয়ও পরোয়া করেনি। পরে সঠিক বিচারের দাবিতে স্মৃতি সরকার মঙ্গলবার বিকেলে মাধবপুর থানায় একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা জমা দেন। থানায় মামলা দেওয়া হলেও এখনও কেন মামলাটি নথিপত্র করা হয়নি সে বিষয় নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন?
মামলার বাদী স্মৃতি সরকার বলেন, তারা দুই বোন। অর্থের অভাবে তারা লেখাপড়া করতে পারিনি। তারা সংখ্যালঘু বলে এলাকায় তাদের খুব কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। তার মধ্যে আবার লম্পট ফরুকের প্রেমের কুপ্রস্তাব ও ধর্ষণ করা হুমকি। তেমনি সোমবার দুপুরে ফুরুক তাদের বাড়ি যায়। তার ছোটবোন ইতিকে একা পেয়ে সেই সুযোগে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ঘরে নিয়ে মুখ বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা ও খারাপ কাজ করার চেষ্টা করেন। ছোটবোনকে বাঁচাতে গেলে স্মৃতির গায়ে ফরুক হাত দেয়।
হরিধন সরকার জানান, ফারুকের নামে এর আগে কয়েকজন নারীর সাথে এমন খারাপ করেছে। কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ফরুক। তারা হিন্দু সংখ্যালঘু বলে গ্রামে তারা সঠিক বিচার পাননি। অনেকদিন হল এখনও থানায় মামলাটি করতে পারেনি।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেছি। সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের দুই মেয়েকে ফরুকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে বলে জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা পেয়েছি। তদন্ত করে অভিযুক্ত ফরুকের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্হা নেওয়া হচ্ছে।