মৌলভীবাজার প্রতিনিধি::বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাগণের অংশগ্রহনে বিটিআরআই-এ দুই সপ্তাহব্যাপী (৪ অক্টোবর- ১৫অক্টোবর’২০) “চা আস্বাদনী ও মান নিয়ন্ত্রন” সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটর (বিটিআরআই) টি-টেস্টিং রুমে দেশের বিভিন্ন চা বাগানে উৎপাদিত চা এর গুণগতমান নির্ণয় এবং চায়ের কোয়ালিটি নিয়ে টি-টেস্টিং বা ‘চা আস্বাদন’ সম্পন্ন হয়।
সিলেট বিভাগের ৫টি ভ্যালী (জুড়ি, লংলা, বালিশিরা, মনু-দলই এবং লস্করপুর ভ্যালী) প্রায় অর্ধশত চা বাগানের বিভিন্ন গ্রেডের চা মান যাচাইয়ের জন্য ‘চা আস্বাদন’ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।চা বাগানের উৎপাদিত ডিএম চা, বিওপি, জিবিওপি, ওএফ, পিএফ, সিডি, আরডি, ডাস্ট গ্রেডগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায় অধিকাংশই চা বাগানেই তাদের উন্নতমানের চা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
“চা আস্বাদনী ও মান নিয়ন্ত্রন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম।বিটিআরআইর পরিচালক ড. মোহম্মদ আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিটিবির প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. একে এম রফিকুল হক।‘চা আস্বাদন’ অধিবেশন দেখা যায়, পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গ্রেডের চা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে মান যাচাই করে প্রাপ্ত তথ্য কাগজে লিপিবন্ধ করা হয়েছে। চায়ের কোনো সমস্যা দেখা গেলে তা উপস্থিত বাগান কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণসহ এ সমস্যার সমাধানও তাৎক্ষণিক বলে দেওয়া হচ্ছে।এখানে প্রতিটি চা-বাগানের চা-পাতা হাতে নিয়ে এবং এর রস টেস্ট করে চা আস্বাদন অধিবেশন পরিচালনা করেন বিটিআরআইর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. মো. ইসমাইল হোসেন।
এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করেন বিটিআরআইর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসও) মো. রিয়াদ আরেফিন এবং ঊর্ধ্বতন খামার সহকারী মো. মুজিবুর রহমান। বিভিন্ন চা-বাগানের সিনিয়র টি-প্লান্টার (চা ব্যবস্থাপক), ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও “চা আস্বাদনী ও মান নিয়ন্ত্রন” সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে উপস্থিত ছিলেন লে. কর্নেল মোহাম্মদ কালাম আজাদের নেতৃত্বে ১০ জন সেনা অফিসার এবং কমান্ডার জিএম সরোয়ার সুমনের নেতৃত্বে চারজন নৌ অফিসারদের দুইটি চৌকস টিম।বিটিআরআইর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, দুই-একটি চা-বাগান ছাড়া চা নমুনা উপস্থাপনাকারী প্রায় সকল বাগানের চায়ের মান ছিল ‘থ্রি-প্লাস’ এবং ‘থ্রি ডাবল প্লাস’ অর্থাৎ উত্তম মানের চা। যা খুবই আশাব্যঞ্জক। লিকারের বৈশিষ্ট্য বিবেচনা ওপর ভিত্তি করে চা-পাতাগুলোকে এখানে সুক্ষমভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের চা আন্তর্জাতিক মানের ছিল এবং এখনো আছে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চায়ের চাহিদাকে বাড়াতে চাই। তবে ২টি জিনিসের ওপর আমাদের বেশি করে লক্ষ্য রাখতে হবে। খরচ এবং প্রোডাকশন এবং চায়ের মান তারপর মুল্য। সেসব বিষয় নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে আগামীতে আমরা ভালোমানের চা-রপ্তানি করতে পারবো ।’