Saturday , 23 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
‘শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের সব কিছুই হবে স্মার্ট’
--সংগৃহীত ছবি

‘শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের সব কিছুই হবে স্মার্ট’

অনলাইন ডেস্ক:

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, একটা সময় বাংলাদেশ ছিল হতদরিদ্র, মিসকিন আর ভিক্ষুকের দেশ। বঙ্গবন্ধু উন্নয়নশীল দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছেন।

আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে কুমিল্লার টাউন হল অডিটরিয়ামে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।মন্ত্রী বলেন, যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। এ জন্য শেখ হাসিনার সরকার সারা দেশে যোগাযোগ খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিপুল উন্নয়ন হয়েছে, এখনো হচ্ছে।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা থেকে শুরু করে সব ইতিবাচক অর্জন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অধীনে রয়েছে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইতিবাচকতার এই ধারা বজায় রাখতে হবে দেশের ও মানুষের স্বার্থে।স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে উন্নয়নের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু যে অগ্রগতি অর্জন করেছিলেন তা ছিল অকল্পনীয়। অথচ নিন্দুকেরা এখন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অর্জনকে যে রকম অস্বীকার করছে ঠিক একইভাবে বঙ্গবন্ধুর অর্জনকেও তখন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, একটা সময় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৩৯০ ডলার, যা এখন ২৮০০ ডলারের ওপর, অন্যদিকে বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু ঋণ একসময় ১০ হাজার ছিল, যা বর্তমানে ৯৫ হাজার টাকা। আয় ও ঋণের অনুপাতে অগ্রগতি করার পরও নিন্দুকেরা ঋণের অঙ্ক দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়নি এবং এই ঋণ দেশের জনগণের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে, যার সুফল এখন মানুষ পাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ফলে দেশ আজ দ্রুতগতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপির শাসনামলে কৃষকরা সারের দাবিতে মিছিল করতে গেলে সেখানে গুলি করে কৃষক হত্যা করা হয়েছে, এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়ায় মানুষের জীবনে অসহনীয় দুর্ভোগ নেমে এসেছিল আর আওয়ামী লীগের আমলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশকে আবার খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে বিএনপি সরকার।

মন্ত্রী এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং বা বিভাজন থাকলে সেই সুবিধাকে পুঁজি করে বিরোধীরা দেশে অরাজকতা এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় কুমিল্লার উন্নয়নে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, কুমিল্লা জেলার উন্নয়নে যখন যতটুকু দরকার তা বরাদ্দ দিতে কখনো কার্পণ্য করিনি। কিন্তু সেই অর্থ সঠিকভাবে এবং সঠিক সময়ে ব্যয় করার দায়িত্ব আপনাদের। কুমিল্লা জেলায় পানি সরবরাহ এবং পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য কুমিল্লা ওয়াসা প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে জানিয়ে বলেন, আধুনিক ও উন্নত কুমিল্লা জেলার জন্য এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ ছাড়া কুমিল্লা জেলার উন্নয়নে দাতা সংস্থা যেমন- বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক অথবা জাইকার সহায়তায় যেকোনো প্রকল্প নিতে তিনি সর্বতো সহযোগিতা করবেন বলেও জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

বিএনপি সুশাসন কিভাবে দেবে সে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির সময়ে খাদ্য ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা হলে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী জবাব দিয়েছিলেন, তাতে বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্তি সহজ হয় আর আমার নেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, ভিক্ষুকের জাতি হওয়ার জন্য ৩০ লাখ লোক শাহাদাত বরণ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনেনি।

মো. তাজুল ইসলাম প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে হত্যা ও সন্ত্রাস ছাড়া আর কী অর্জন রয়েছে তা মানুষ জানে।এমনকি তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও হত্যা করার চেষ্টা করতে পিছপা হয়নি, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের ১৭ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয় আর অসংখ্য নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেন। বিএনপির রাজনীতি হত্যার রাজনীতি তা প্রমাণিত।

তিনি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে কলুষিত করার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে বলেন, এখন তারাই আবার সেই ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায়, যাতে আবার তারা মানুষকে ধোঁকা দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংবিধানের বাইরে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।

মন্ত্রী তাঁর নিজের জেলা কুমিল্লাকে নিয়ে বলেন, কুমিল্লা আমার প্রিয় শহর। কুমিল্লা অনেক গুণী মানুষের শহর। কুমিল্লার মানুষ হিসেবে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। কুমিল্লা শহরের উন্নয়নে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন কাজগুলো যেন পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হয়- সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ কুমিল্লা আমার অহংকার। কুমিল্লা আমার শরীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কুমিল্লার উন্নয়নে আমি পাশে আছি।

কুমিল্লা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান বাবলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কুমিল্লা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেলিমা আহম্মদ মেরী, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জামাল নাছের, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার, জেলা পিপি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবু জাফর খান প্রমুখ।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply