সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে শিল্পাচার্যের কবরে উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। এরপর চারুকলার বকুলতলার মঞ্চে উপাচার্য বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ, সোনারগাঁর বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক আহমেদ উল্লাহ ও শিল্পাচার্যের ছেলে খায়রুল আবেদিন। স্বাগত বক্তব্য দেন চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন। অনুষ্ঠানে চারুকলায় অবদান রাখার জন্য ‘জয়নুল সম্মাননা’ দেওয়া হয়। এ বছর সম্মাননা পেয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পী অধ্যাপক আবদুস শাকুর শাহ এবং ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক রমণ শিবকুমার। এ ছাড়া করোনা অতিমারির কারণে গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা পদক দিতে না পারায় ২০২০ সালের সম্মাননাপ্রাপ্ত শিল্পী আবুল বারক্ আল্ভীর হাতেও সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
উৎসব উপলক্ষে চারুকলা অনুষদের আটটি বিভাগের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের শিল্পকর্ম এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পীদের কাজ নিয়ে শুরু হয়েছে বর্ণাঢ্য প্রদর্শনী। এ ছাড়া বিকেলে বকুলতলা মঞ্চে ছিল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য, অঙ্কন ও চিত্রায়ণ, গ্রাফিকস ডিজাইন, ছাপচিত্র, প্রাচ্যকলা, কারুশিল্প, মৃৎশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের পক্ষ থেকে আলাদা করে টেবিলে শিল্পসম্ভার সাজিয়ে রাখা হয়েছে সামনের ভবনের বারান্দায়। সেখানে সুলভ মূল্যে বিভিন্ন মাধ্যমের চিত্রকলা ও ভাস্কর্যসহ শিল্পসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে।
নিসার হোসেন জানান, ২০০৯ সাল থেকে শিল্পাচার্যের জন্মদিন উপলক্ষে জয়নুল উৎসব ও সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। এবার জয়নুল উৎসবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন সহ–আয়োজক হিসেবে অংশ নিয়েছে। তাদের ব্যবস্থাপনায় যেসব কারুশিল্পী বংশপরম্পরায় কারুশিল্পের কাজ করে আসছেন, তাঁদেরই এই মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে কারুশিল্পীরা যেমন সরাসরি তাঁদের পণ্যের বিপণন ও ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন, তেমনই চারুকলার শিক্ষার্থীরা তাঁদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন।